সাত বছর পর চালু হচ্ছে চলতী নদীর ধোপাজান বালুমহাল
অবশেষে দীর্ঘ প্রায় সাত বছর পর সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চালতী নদীর বৃহৎ বালুমহাল ‘ধোপজান খুলতে যাচ্ছে। ১৩ জানুয়ারি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরিনা আফরিন মুস্তাফা স্বাক্ষরিত এক স্মারকলিপিতে আগের আদেশ বাতিল করেন। সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জের ধোপাজান মহলে ২০১৮ সাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।
দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার কারণে বালু মহল নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে ধোপজান মহল থেকে রাতের আঁধারে শত শত কোটি টাকার বালু-পাথর লুট হয়েছে। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বালু-পাথর লুটপাট অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়া বালু মহল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। অবশেষে দীর্ঘ ৭ বছর পর বালুমহাল চালুর খবরে আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী মানুষ।
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুল বলেন, আমরা লুটপাট ও চাঁদাবাজিমুক্ত একটি শ্রমিকবান্ধব বালু-পাথরের প্রাসাদ দেখতে চাই। জেলা বারকি শ্রমিক সংঘের সভাপতি নাসির মিয়া বলেন, আমরা চাই বারকি শ্রমিকরা পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাজের সুযোগ পাবে। এসব বিষয়ে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
সরকারি তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চালতী নদী ভারত থেকে ডলুরা সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপশহরের সদরগড় এলাকায় সুরমা নদীর সঙ্গে মিশেছে। চালতী নদীর ডলুরা এলাকায় ৩৭১ একর জমি জুড়ে একটি বালির প্রাসাদ রয়েছে। এই প্রাসাদের নাম ধোপাজান বালুমহাল। এক সময় এই নদীর বালু মহল থেকে ড্রেজার ও বোমা মেশিন ব্যবহার করে অবাধে বালু উত্তোলন করা হতো, যার ফলে উভয় তীরের অনেক গ্রাম ও স্থাপনা ভাঙনের শিকার হয়। প্রকৃতি ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই কারণে, ২০১৮ সালে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সিদ্ধান্তে বর্তমান নদীতে বালি ধোয়ার সুবিধার ইজারা বন্ধ করা হয়েছিল। পরে ২০২০ সালে ইজারা বন্ধের আদেশ জারি করা হয়। এরপর থেকে আর ইজারা দেওয়া হয়নি। তবে নদী তীরবর্তী এলাকার হাজার হাজার শ্রমিক ছোট ছোট নৌকায় করে বালু উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
Do Follow: greenbanglaonline24