• বাংলা
  • English
  • রাজনীতি

    আপিল খারিজ।জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায় বহাল রয়েছে

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক দল হিসেবে দেওয়া নির্বাচনী নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের লিভ-টু-আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।

    আজ রোববার (১৯ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

    ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে অস্থায়ী নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল মুন্সী আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি মুন্সী আবদুল লতিফ। , মাওলানা জিয়াউল হাসান ২৫টি জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট দায়ের করেন।

    রিটে জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের অনুরোধ জানান।

    বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৭ জানুয়ারি ২০০৯ এ রুল জারি করেন। আসামিদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে ছিল এবং প্রতিনিধিত্বের ৯০ (বি) (১) (বি) (২) ও ৯০ (গ) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

    জামায়াতের নিবন্ধন সংক্রান্ত বিধিমালা জারি করার পর তারা ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দুবার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দুবার গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। এসব সংশোধনীতে দলটির নাম ‘জামায়াত-ই-ইসলামী, বাংলাদেশ’ থেকে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।

    পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে, আবেদনকারীরা রায় শোনার জন্য একটি বেঞ্চ গঠনের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৫ মার্চ আবেদনটি বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেনের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। ১০ মার্চ, ডাবল বেঞ্চ সাংবিধানিক এবং আইনি প্রশ্ন জড়িত থাকায় বৃহত্তর বেঞ্চের শুনানির প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে পিটিশনটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। ওই দিন প্রধান বিচারপতি তিন বিচারপতির সমন্বয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন।

    ১২ জুন, ২০১৩ তারিখে, হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ অপেক্ষায় থাকে (CAV) এই বলে যে এই রুলের শুনানির পরে যে কোনও দিন রায় দেওয়া হবে। পরে বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন বাতিল করে।

    এ সময় আদালত সংক্ষিপ্ত রায়ে বলেন, নিবন্ধন আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে। একই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। তবে একই বছরের ৫ আগস্ট আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী জামায়াতের স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ করে দেন। পরে একই বছরের ২রা নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। আবেদনকারী আপিল শুনানির উদ্যোগ নেন। সে অনুযায়ী চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার আপিল করা হয়।

    এরপর ৩১ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করতে দুই মাসের সময় দেন।