অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রকে হুমকি—গ্রেপ্তার এনসিপি সদস্যসহ দু’জন
রংপুরে এক স্কুলছাত্রকে পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রংপুর মহানগর সমন্বয় কমিটির সদস্যসহ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রংপুর মহানগরের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে পিস্তলসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, স্থানীয় ছাত্র ও জনতা দুই যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করলে, এনসিপি নেতারা তাদের ছেড়ে দিতে তাজহাট থানায় যান।
গ্রেপ্তারকৃত দুই যুবক হলেন রংপুর মহানগর এনসিপি সমন্বয় কমিটির রাগীব হাসনাইন (৩০) এবং রকিবুল ইসলাম ওরফে তুষার (২৮)। রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় রাকিবুল প্রথম আসামি বলে জানা গেছে।
এর আগে, গতকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) তোফায়েল আহমেদ থানায় এসে আমাদেরকে বলেন, “তাদের হুমকি ও ভয় দেখানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা একটি পিস্তল উদ্ধার করেছি। এটি গুলি চালানোর পিস্তল কিনা তা জানতে আমাদের বিশেষজ্ঞের মতামত প্রয়োজন। যদি এটি পিস্তল হয়, তাহলে অস্ত্র আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গতকাল সন্ধ্যা ৮টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড়ে কাওসার একাডেমির সামনে প্রেম সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দুই স্কুলছাত্রের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় এক পক্ষের সমর্থনে রাগীব ও তুষার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, “রাকিবুল পিস্তল বের করে এক ছাত্রের মাথায় তাক করার পর উত্তেজিত শিক্ষার্থী এবং জনতা তাদের ঘিরে ফেলে, মারধর করে এবং পুলিশের হাতে তুলে দেয়।”
গতকাল রাতে থানায় দেখা যায়, ঘটনার পর এনসিপির মহানগর সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলাল উদ্দিন কাদেরীসহ অন্যান্য নেতারা থানা ও তার আশেপাশে অবস্থান করছিলেন। তারা অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) কক্ষে গিয়ে দুই যুবককে উদ্ধারের চেষ্টাও করেন।
এনসিপির রংপুর মহানগর সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলাউদ্দিন কাদেরী থানার ভেতরে আমাদের কাছে দাবি করেন যে, গ্রেপ্তার রাগীব এনসিপির সদস্য। রকিবুল এনসিপির সমর্থক। তিনি দাবি করেন যে, পার্ক মোড়ে রকিবুলের ভাগ্নেকে মারধর করা হয়েছে এমন খবর শুনে তারা সেখানে যান। কিন্তু লোকজন জনতা তৈরি করে খেলনা পিস্তল দেখিয়ে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
রংপুর মহানগরের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী বলেন, “পিস্তল জাতীয় বস্তু দেখিয়ে মারামারি ও ভয় দেখানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পিস্তল জাতীয় বস্তুটি ব্যালিস্টিক শাখায় পাঠানো হয়েছে। যদি এটি আগ্নেয়াস্ত্র হয়, তাহলে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হবে।”

