কী চলছে, কীভাবে চলছে
করোনাকালে হার্ভার্ডের ক্যাম্পাসেই আছেন সিয়ামছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের নানা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করোনাকালে কী উদ্যোগ নিয়েছে, কীভাবে চলছে পড়ালেখা? লিখেছেন ভিনদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।
হার্ভার্ড শিক্ষার্থীদের কথা ভাবছে আগে
সিয়াম শহীদ নূর, ফলিত গণিত ও কম্পিউটারবিজ্ঞান, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র
কোভিড–১৯ অতিমারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতোই আমার বিশ্ববিদ্যালয় ও আমার জীবনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। এ বছরের শুরু থেকেই কোভিডের কারণে নানা সতর্কতার জন্য ক্লাসরুমের পড়াশোনা বন্ধ। আসছে ফল সেশনেও সম্ভবত অনলাইনেই ক্লাস করতে হবে আমাদের। কোভিডের সময়টায় আমি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়েট হাউসে থাকছি। আমাদের সব ক্লাসই অনলাইনে চলছে, একই সঙ্গে চলছে পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট আর থিসিসের কাজ। যেসব অনুষদের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেই, তারা অনলাইনে পেপার বা অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে পরীক্ষা নিচ্ছে, গ্রেড দিচ্ছে। এ ছাড়া প্রকৌশল বা বিজ্ঞানবিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরীক্ষা নিচ্ছে কয়েকটি বিভাগ। নম্বর পাওয়ার জন্য কোনো কোনো কোর্সে প্রকল্প তৈরি করতে হচ্ছে।
যেহেতু সব শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট ব্যবহারের সমান সুযোগ নেই, তাই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস কিছুটা উন্মুক্ত রেখেছে। যার যার অবস্থান থেকে যথাসম্ভব নিরাপত্তা বজায় রেখে যেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ক্যাম্পাসে বিশেষ সুবিধা হিসেবে আমরা যারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, দেশে যাইনি, তারা থাকছি। কোভিডের কারণে ন্যূনতম হোস্টেল ফি নেওয়া হচ্ছে। টিউশন ফি কমানো না হলেও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ক্যাম্পাস, ডাইনিং, লাইব্রেরিসহ সব জায়গায় যতটা সম্ভব সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে নানা নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে চলাফেরার সুযোগ বেশ সীমিতই এখন। অতিমারির শুরুর দিকে শিক্ষার্থীদের দেশে পাঠানোর জন্য হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বিমানের টিকিট কিনে দিয়েছিল।
দেশে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও মা–বাবা ও আত্মীয়স্বজন যেন ঝুঁকির মধ্যে না পড়েন, তাই এখানে আছি। চেষ্টা করছি মানসিকভাবে নিজেকে স্থির রাখতে। ‘বাংলাদেশ পারস্পেকটিভ’ নামে একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি আমি। প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে, কীভাবে বৃত্তি পেয়েছে, কীভাবে গবেষণার সুযোগ তৈরি করেছে ও জীবনে সফল হয়েছে, তার কৌশল নিয়ে অনলাইন ভিডিও অধিবেশন আয়োজন করছি। নিজেকে ব্যস্ত রাখছি। আগামী বছর সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে। সব শিক্ষার্থীর মতো আমারও আগ্রহ আছে মা–বাবার সঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নেব। কিন্তু কোভিডের কারণে তো সবই অনিশ্চিত। সেই সৌভাগ্য হবে কি না, কে জানে!বিজ্ঞাপন