রাজনীতি

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুল হতে পারেন

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় তাকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান করা হতে পারে। দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপনের পুরস্কার হিসেবে এই পদটি দেওয়ার প্রস্তাব করায় গত এক মাস ধরে নগরীতে আলোচনা চলছে। সম্প্রতি আরিফুল হকের যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিষয়টি সামনে আসে। কেউ কেউ দাবি করছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন। শনিবার আরিফুল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসছে।

সিলেট বিএনপির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা এ বিষয়ে সরাসরি মুখ না খুললেও আকারে-ইঙ্গিতে এমন বার্তা দিচ্ছেন। তবে আরিফুল হক চৌধুরী বলছেন, দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কোনো পদের লোভে তিনি এ কাজ করেননি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, রাজনীতি করলে পদ-পদবি পাবেন, এটাই স্বাভাবিক। হয়তো আরিফুল হক কেন্দ্রীয় সদস্য থেকে পদোন্নতি পাবেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান হওয়া বা পদোন্নতির সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। দল চাইলে যে কাউকে নিয়োগ দিতে পারে।

বিস্তারিত ঘোষণার পরপরই তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাজ্যে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক। এরপর থেকে তার সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় ছিল নগরবাসী। অন্য মেয়র প্রার্থীরাও অপেক্ষায় ছিলেন। বাসায় ফিরে তিনি বলেন, নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মতামত নিয়েছেন। এ সময় নাগরিকরাও তাকে ভোট দিতে চাপ দেন। শনিবার তিনি নগরবাসীকে উদ্ধৃত করে বলেন, জনগণ বলেছে তাদের এতিম করা উচিত নয়।

শনিবার নগরীর সাব-রেজিস্ট্রি মাঠে নাগরিক সভায় কাউকে কথা বলার সুযোগ দেননি তিনি। মাঠে দলীয় নেতা-কর্মীসহ হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তারা ভেবেছিলেন, আরিফুল তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেবেন।

বৈঠকে উপস্থিত নগরীর শামীমাবাদ এলাকার বাসিন্দা জুয়েল আহমেদ বলেন, আমরা চেয়েছিলাম আরিফুল হক নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা দেবেন। কালীবাড়ি এলাকার আরেক বাসিন্দা আহমদ শাহীন বলেন, আরিফুল হক নেই, নির্বাচনও নেই। তিনি থাকলে নির্বাচন জমে যেত। আমরা তাকে আবারও একজন কাজের মানুষ হিসেবে চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমাদের হতাশ করেছেন।

আরিফুল হকের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় রোববার নগরীর পাড়া-মহল্লা ও চায়ের দোকানে ব্যাপক আলোচনা হয়। কেউ বলেছেন দলের কারণে, আবার কেউ বলেছেন নানা চাপ ও আশঙ্কায় তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। শনিবার এক আবেগঘন বক্তৃতায় আরিফ নিজেই কেঁদে ফেলেন, মানুষকে কান্নায় ফেলে দেন।

ভোট চুরির পরিকল্পনা, প্রহসনমূলক নির্বাচন চূড়ান্ত করা, পুলিশ প্রশাসনকে হয়রানি করা, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের অভিযোগ এনে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে ঘোষণা দেন। এসময় তিনি উপস্থিত জনগণকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানান।

মহানগর বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে আরিফুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। নির্বাচিত হলে তিনি জয়ী হতেন। কিন্তু দলটি নির্বাচনে যাচ্ছে না। দলের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার বিষয়টি এখানে জড়িত নয়।

সিলেট সিটি করপোরেশনে আগামী ২১ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল পর্যন্ত মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনসহ ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।