আ.লীগের সমাবেশে ওবায়দুল কাদের।দেশের জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই, বিদেশেও কোনো বন্ধু নেই
একের পর এক বিদেশি কূটনীতিকরা বাংলাদেশে আসছেন। সরকারের সঙ্গে তাদের ইতিবাচক বৈঠক ও মতবিনিময় হয়েছে। তবে বিএনপির সঙ্গে তাদের দেখা হয়নি। দেশে বিএনপির কোনো লোক নেই, বিদেশে তাদের কোনো বন্ধু নেই। শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ হাজী মকবুল হোসেন কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ডোনাল্ড লু ও ডেরেক শোল এসেছিল। বিএনপি দিনরাত বসে ছিল মার্কিন দূতাবাসে- যদি একবার দেখা করতে পারতাম। কিন্তু তারা মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেননি। এ কারণে তারা ক্ষুব্ধ।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা অনেক আগেই ভারতকে আমাদের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে। এখন আমেরিকা নেই। কোথায় যাব? বিদেশী বন্ধু নেই, দেশের মানুষ নেই। তাহলে উপায় কি? ঘরে বসেই দেখবেন হিন্দি সিরিয়াল। আর জানালা দিয়ে পুলিশের গতিবিধি দেখুন।
তিনি বলেন, এ দেশকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনতে বারবার তদবির করেও ব্যর্থ হচ্ছে বিএনপি। কত জায়গায় বিএনপি নেতাদের নিষেধাজ্ঞা গেল! কত তদবির, নিষেধাজ্ঞা এল?
চলতি মাসে আমেরিকায় অনুষ্ঠেয় গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণ না পাওয়ার বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র সম্মেলনে কাকে আমন্ত্রণ জানাল বা না দেওয়া নিয়ে শেখ হাসিনার সরকারের কোনো সমস্যা নেই। কে কাকে আমন্ত্রণ জানায়, কোথায় সম্মেলন হচ্ছে তা ভাবার সময় নেই সরকারের। এদেশে গণতন্ত্র ঠিক আছে কি না- এটাই বর্তমান সরকারের চিন্তা ও ভূমিকা। দেশের মানুষ শান্তিতে আছে কি না সেটাই সরকারের প্রধান চিন্তা।
চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের পদযাত্রা কর্মসূচির বিরুদ্ধে এই শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে রাজধানীতে আরেকটি শোডাউন করেছে আওয়ামী লীগ। সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তরের আওতাধীন বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী যোগ দেন। ফলে সমাবেশ জনসভায় পরিণত হয়।
একই দিনে রাজধানীতে আরও দুটি সমাবেশ ও মিছিল করেছে সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। এ ছাড়া বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে সম্ভাব্য সন্ত্রাস-সহিংসতা ও নৈরাজ্য ঠেকাতে বরাবরের মতো গতকালও রাজধানীজুড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন সরকার সমর্থক নেতাকর্মীরা।
মোহাম্মদপুরে শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিএনপি এখন তিক্ত হয়ে পড়েছে। তারা স্লো মোশনে মিছিল করছে, শর্ট মার্চ থেকে লংমার্চে যাচ্ছে- সব ভুয়া। গণঅভ্যুত্থান বা গণজাগরণের কথা বললেও বিএনপির আন্দোলনের নদীতে জোয়ার নেই, গণজোয়ার আসে না। পদযাত্রার নামে যতই চেষ্টা করুক না কেন, নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই।
তিনি বলেন, কোনো আপস নেই। আওয়ামী লীগ পালায় না, পালাতেও জানে না। কারণ আওয়ামী লীগের শিকড় মাটির গভীরে। এই দলকে জনগণ থেকে আলাদা করা, নামিয়ে আনা সম্ভব নয়। লুণ্ঠনের রাজা তারেক জিয়ারাই পালিয়েছে, বিএনপি নেতারা পালিয়ে যেতে পারে। আমরা এই দেশেই থাকব।
সেতুমন্ত্রী বলেন, লুটপাট ও সন্ত্রাসের শীর্ষে থাকা তারেক জিয়া খাম্বা নির্দোষ। তার কাজ ছিল খাম্বা ব্যবসা এবং লুণ্ঠন। তার হাওয়া ভবনের আরেক নাম খাওয়া ভবন, লুটিং ভবন। নিজের ভাগ্য নয়, সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে শেখ হাসিনার সরকার।
বিএনপি থেকে জনগণকে সতর্ক ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে নারী স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে, বাংলাদেশকে আফগানিস্তানে পরিণত করবে। বিএনপি দুর্নীতিবাজ রাজনীতির ওস্তাদ, এদেশে রাজনীতি ও গণতন্ত্রের বিষবাষ্প। দেশ, জনগণ, গণতন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা তাদের কাছে নিরাপদ নয়। সুযোগ পেলে মানুষ পুড়িয়ে, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনে ১৪ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশ। ১৪ বছর আগে ঢাকা বা সমগ্র বাংলাদেশে কতটা পরিবর্তন হয়েছে তা দৃশ্যমান। যেখানে উন্নয়ন ও উন্নয়ন দেখা যায়। বৈশ্বিক সংকটেও দেশের মানুষ শেখ হাসিনার ওপর নির্ভরশীল। শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নে জনগণ খুশি হলেও ক্ষুব্ধ শুধু বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বিএনপিকে চীনে রাখতে হবে। তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। রাজপথে একসঙ্গে তাদের থামাতে হবে। আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।
দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, যখনই নির্বাচন আসে বিএনপি মিথ্যা অপপ্রচারে এগিয়ে আসে। বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আওয়ামী লীগ জনগণের জীবন রক্ষায় রাজপথে আছে, ছিল এবং থাকবে।