‘মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, পদ্মা সেতু দেখেছি’
ঘড়ির কাঁটা সকাল সাড়ে ৭টা। জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে সাংবাদিকদের নিয়ে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে রওনা হলাম। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের খবর সংগ্রহ করতে। ঢাকার প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার পার হয়ে মহাসড়কে হেঁটে যান । উৎসবের বর্ণিল আয়োজন। বুঝতে অসুবিধা হল না আরও কত চমক অপেক্ষা করছে।
মহাসড়কের চারপাশ নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে। দুপাশে নানান নজরকাড়া সাজসজ্জা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত হাজার হাজার ব্যানার, রঙিন ফেস্টুন-পোস্টার, বড় বড় তোরণ, বিশাল বিলবোর্ড ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ। চারদিকে আনন্দের ঢেউ বইছে বিস্তীর্ণ গ্রামে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বাঙালি জাতিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন। শুধুমাত্র তার আত্মবিশ্বাস, দৃঢ় সংকল্প ও অক্লান্ত পরিশ্রমে বাঙালির স্বপ্ন, সাহস ও অহংকার পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে সামনে এসেছে। এটি একটি অবিশ্বাস্য রূপকথার বাস্তব প্রতিফলন।
প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন, সাহস, প্রেরণা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার একটি উল্লেখযোগ্য অনুস্মারক। তাই বাঙালি বলতে পারে- আমার টাকায় আমার সেতু, বাংলাদেশে পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনে সমবেত অনেকেই উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, শেখ হাসিনার অদম্য সাহসিকতা ও অদম্য দৃঢ়তার কারণে লাখো মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। একই সঙ্গে এই সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা, আত্মবিশ্বাস ও অর্জনের এক অনন্য বার্তা।
উদ্বোধনের পর ফেরার পালা। কয়েকজন সহকর্মী দক্ষিণবঙ্গে থাকেন। তাদের মতে, দক্ষিণবঙ্গের লাখ লাখ মানুষ প্রমত্তা পদ্মার শিকার। আবহাওয়া খারাপ থাকলে আমাদের যতই প্রয়োজন থাকুক না কেন, যাওয়ার সুযোগ ছিল না। প্রিয়জনের মৃত্যুতেও গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। আটকে পড়ে অনেক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাই পদ্মা সেতু সেই গ্রামের জন্য স্বপ্ন, সাহস, আবেগ ও অহংকার।