• বাংলা
  • English
  • বিবিধ

    ইফতার।এক ছাদের নিচে ৪ হাজার রোজদার

    ঘড়ির কাঁটা তখন বিকেল সাড়ে পাঁচটা। মসজিদের প্রধান ফটকের সিঁড়িতে মানুষের ঢল। সবাই সামনে ছুটছে। দূর থেকে শুধু মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মুখোমুখি সারিবদ্ধ হয়ে বসে আছেন। সারিবদ্ধভাবে বসে থাকা রোজাদারদের সামনে কেউ কেউ গ্লাস ভর্তি শরবত দিচ্ছেন, আবার কেউ আবার নিয়ে আসছেন ছোলা, পেঁয়াজ, বেগুনি, খেজুর, পাকোড়াসহ ইফতারির প্লেট। ইফতারের সাইরেন বাজারের একটু আগে হাত তুলে মোনাজাতে অংশ নেন মুসল্লিরা। সাইরেন বাজিয়ে ইফতারে যোগ দেন হাজারো রোজাদার।

    এটি চট্টগ্রাম নগরীর ৩৫৬ বছরের পুরনো আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের প্রতিদিনের ইফতারের চিত্র। গোটা মক্কা-মদিনার আদলে প্রতিদিন এক ছাদের নিচে তিন থেকে চার হাজার রোজাদার একসঙ্গে ইফতার করেন। এ যেন এক টুকরো ‘মক্কা-মদিনা’। ধনী-গরীব, ফকির-মিসকিন, দিনমজুর, শ্রমজীবী ​​মানুষ, ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে সারিবদ্ধভাবে রোজা ভাঙে।

    ইফতার করতে আসা রোজাদাররা বিশ্বাস করেন, বেশি লোক একসঙ্গে বসে ইফতার করলে বেশি সওয়াব পাবেন এবং দোয়া কবুল হবে। আর সওয়াবের আশায় দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ইফতারে অংশ নিতে অনেকেই আসেন। ছোট বাচ্চাদের নিয়েও হাজির হন অনেকে। মক্কা-মদিনার আদলে ইসলামী ভ্রাতৃত্বের এই ইফতারের পেছনে রয়েছেন মসজিদের খতিব হযরত শায়খ মুহাম্মদ আনোয়ার হুসাইন তাহের জাবেরী আল-মাদানী। সৌদি আরব, মক্কা ও মদিনায় সম্মিলিত ইফতারের ঐতিহ্য রয়েছে। তিনি ১৯৯৭ সালে নিজ উদ্যোগে সীমিত পরিসরে ইফতারের আয়োজন শুরু করেন। পরবর্তীতে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং মসজিদের মুছল্লী পরিষদের সার্বিক সহযোগিতায় ২০০৬ সাল থেকে চট্টগ্রামে নিয়মিত ইফতারের আয়োজন করা হয়।এর পর থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক ও সংগঠনের সহযোগিতায় এ বিশাল আয়োজন হয়ে আসছে।

    খতিব ছৈয়্যাদ মুহাম্মদ আনোয়ার হুসাইন তাহের জাবেরী আল-মাদানী বলেন, শুরুতে সীমিত আকারে শুরু হলেও এখন তা মক্কা-মদিনার মতো বড় হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার রোজাদার একসঙ্গে বসে রোজা ভাঙার দৃশ্য দেখতে অন্যরকম। এমন ইফতার আয়োজন দেখে মুগ্ধ হয়েছেন অনেক উদার ও দয়ালু মানুষ। এজন্য তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে এ কাজে অংশ নিচ্ছেন।

    খতিবের একান্ত সচিব মো. হাসান মুরাদ বলেন, “অনেক জনহিতৈষী আছেন যারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং মসজিদে কয়েক ট্রাক ছোলা, ডাল বা তেল পাঠান।”

    ইফতার বিতরণে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা মোরশেদ বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে আমি নিজের ইচ্ছায় অনেকের কাছে ইফতার বিতরণ করতে এসেছি। পুরো রমজান মাসে ইফতারের পর থেকে একটি মার্কেটে সেলসম্যানের কাজ করছি। এখানে ইফতারের পর কর্মস্থলে যোগদান করি।

    মন্তব্য করুন