• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    হাওরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত।কৃষকরা ঘরে  তুলছেন কাঁচা ধান

    ভারতের উজান থেকে আসা বন্যার পানিতে কিশোরগঞ্জের হাওরের নিম্নাঞ্চলের বোরো ধানের জমি তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে কৃষক পরিবার। তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে যাচ্ছে একমাত্র বোরো ফসল। শনিবার বিকেল থেকে বন্যার পানি বিভিন্ন হাওরে প্রবেশ করতে থাকে। নদী তীরবর্তী চরগুলো তলিয়ে যাচ্ছে। এই মুহুর্তে কৃষকের অবস্থা দেখা ছাড়া কিছুই করার নেই। কারণ কাঁচা ধান কাটার উপায় নেই। অধিকাংশ জমির ধান এখনো কাঁচা। স্থানীয় কৃষি বিভাগসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও ক্ষতির কোনো হিসাব দিতে পারেনি। কর্মকর্তারা বলছেন, মূল হাওরগুলোতে এখনো পানি প্রবেশ করেনি। নদীর তীরবর্তী কিছু জমি তলিয়ে গেছে।

    উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার দাস জানান, ধনপুরের হাপনিয়া, রামপুরের চর, চরপাড়া হাওর ও কাতুইল হাওরে নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু জমি তলিয়ে গেছে। তিনি জানান, প্রায় ৪০০ একর জমির ধান জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

    ইটনার চিলানী গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন জানান, তার বাহিরচর হাওরে এক একর জমি তলিয়ে গেছে। কাঁচা ধান কাটা যায় না। পাঙ্গাসিয়া হাওরে চার একর জমি চাষ করেছেন একই এলাকার কৃষক মান্নান মিয়া। টাকার বিনিময়ে অন্যের জমি কিনে নেন। ঢলের পানিতে সবই ডুবে যাচ্ছে।

    ধনপুরের কৃষক ফজলুল হক জানান, তার নিজের ১০ একরের বেশি জমি রয়েছে। এরই মধ্যে নিচু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। তাই ভবিষ্যতে কী হবে তা নিয়ে ভাবুন।

    তিনি জানান, বছরভর শ্রম দিয়ে জমি চাষ করে আসছেন ভাগচাষীরা। সেই ফসল এখন আমাদের চোখের সামনে ডুবে যাচ্ছে। তারা তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করতে পারে না।

    ইটনার রমানাথপুর গ্রামের কৃষক আলাল মিয়া জানান, দুই বছর ধরে করোনার কারণে বাড়ির বাইরে কিছু করতে পারেননি। তাদের পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস কৃষি জমি। কিন্তু হঠাৎ করে পানি আসায় তাদের সম্পদও তলিয়ে যাচ্ছে।

    কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ছাইফুল আলম জানান, মেঘালয় ও আসামের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সেই বৃষ্টির পানি এসে হাওরে ঢুকেছে। তারা এখনো পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমির সঠিক পরিমাণ পাননি। তবে মূল হাওরে এখনো পানি প্রবেশ করেনি। তাই ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

    দিরাইয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী এটিএম মোনাইম হোসেন জানান, দিরাই উপজেলায় আটটি ঝুঁকিপূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে বাঁধের ওপর পাইলিং করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন বলেন, কোনো বাঁধে ঝুঁকি থাকলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    মন্তব্য করুন