• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    ওমরাহ ও হজকে সামনে রেখে আশাবাদী সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশিরা

    টানা দুই বছর কঠিন পরিস্থিতিতে কাটিয়ে ওমরাহ ও হজকে সামনে রেখে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছেন সৌদি আরবে বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত বাংলাদেশিরা। বিশেষ করে পবিত্র মদিনা ও মক্কার ব্যবসায়ীরা হাওয়া বইতে শুরু করেছেন। সৌদি সরকার ওমরাহ পালনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর সারা বিশ্বের মানুষ সৌদি আরবে আসতে শুরু করেছে। এতে ট্যাক্সি ড্রাইভার থেকে শুরু করে হোটেলে কাজ করা মদিনা ও মক্কার বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আয় বেড়েছে।

    মদিনা ও মক্কায় হোটেলে কর্মরত ব্যবসায়ী, ট্যাক্সি চালক ও বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তারা এখন গত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

    মক্কার হারাম শরীফ থেকে দুই-তিন কিলোমিটার দূরে কাকিয়া এলাকার পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের বড় অংশই বাংলাদেশি। চট্টগ্রামের পাইকারি বিক্রেতা আলী হোসেন জানান, সম্প্রতি তিনি অন্য একটি বাজার থেকে এখানে একটি দোকান ভাড়া নিয়েছিলেন। তার বোরকার সবচেয়ে বড় ক্রেতা কুমিল্লা ও ঢাকাসহ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। ভারত, পাকিস্তান এবং অন্যান্য দেশ থেকে ওমরাহ পালনকারীরাও এখানে বোরকা কিনতে আসেন। গত দুই বছর ধরে তার ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। এ সময় দোকান ভাড়াসহ কর্মচারীদের বেতন পরিশোধে হিমশিম খায়। তবে বিশেষ করে গত দুই মাসে বাণিজ্য বেড়েছে, ব্যবসা জমজমাট। নতুন কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে। আগামী হজে বড় ব্যবসা হবে বলে মনে করেন তিনি।

    আবদুল্লাহ একই মার্কেটের নিচে ঘড়ির ব্যবসা করেন। তার বাড়িও চট্টগ্রাম জেলায়। তার দোকানে একজন কর্মচারী আছে। ওমরাহ পুরোদমে চালু হওয়ায় ক্রেতারা আসছেন বলেও তিনি আশাবাদী।

    মদিনা শরীফের পাশে হযরত বেলাল মসজিদের কাছে খেজুরের একটি বড় পাইকারি বাজার রয়েছে। বাংলা মার্কেট নামে পরিচিত এই মার্কেটের সব ব্যবসায়ীই বাংলাদেশের। এই বাজারটিও ইদানীং জমে উঠেছে।

    টাঙ্গাইলের এ বাজারের খেজুর ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হোসেন। দুই ভাইই প্রবাসে থাকেন। মোজাম্মেল বলেন, ওমরাহ পালনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় খেজুরের বিক্রিও বেড়েছে। এক কেজি ভালো মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৮ রিয়াল, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২২০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে।

    করোনায়, মক্কা ও মদিনায় ট্যাক্সি চালকরা বেশি অসহায় ছিল। টাঙ্গাইলের ট্যাক্সিচালক আবুল কালাম আজাদ ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার আরেক চালক জানান, এখন ভাড়া ভালো। যদিও খরচ বেড়েছে ট্যাক্সি চালকদের। আগে একদিনের ভাড়া বাবদ মালিককে ১০০ রিয়াল (বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই হাজারের বেশি) দিতে হতো। এখন মালিকরা তা বাড়িয়ে ১৫০ রিয়াল করেছে। এরপরও তারা হজ নিয়ে আশাবাদী।

    বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৌদি আরবে কাজের অভাব, আকামা নবায়ন করতে না পারাসহ নানা কারণে গত দুই বছরে অনেক বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। ভাড়া দিতে না পারায় অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। এমনই একজন কুষ্টিয়ার জিল্লুর রহমান। করোনা শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগে তিনি ফাস্টফুডের ব্যবসা শুরু করেন। ভালো বাণিজ্য হতো। কিন্তু করোনায় দোকান বন্ধ করে বিকল্প কাজ করছেন তিনি। প্রথমে বাংলাদেশি কিন্ডারগার্টেনে চাকরি নেন। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকায় তিনি বিকল্প চাকরি নেন।

    প্রবাসীরা জানান, মাঝখানে দেশে টাকা পাঠাতে না পারলেও এখন দেশে টাকা পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে। এবার দুই ঈদের আগেই সৌদি প্রবাসীরা প্রচুর অর্থ পাঠাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

    মন্তব্য করুন