• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    পঞ্চগড়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী

    উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সপ্তাহজুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর এখন মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ চলছে। সকালে সূর্যের দেখা মিললেও তাপ ছড়ানোর আগেই আবারও কুয়াশা আর মেঘে ঢেকে যায় সূর্য। বিকেল শুরু হয় জমাট ঠাণ্ডা হাওয়া আর ঘন কুয়াশায়।

    তীব্র শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগে পড়েছেন রিকশা ভ্যান চালক, কৃষি শ্রমিকসহ শ্রমজীবী ​​মানুষ। ঠান্ডাজনিত কারণে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হচ্ছেন অসংখ্য রোগী। বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

    গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদফতর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়, যা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ৪৮ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

    রোববার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শুক্রবার জেলায় মাঝারি ঠাণ্ডা শুরু হয় রেকর্ড সর্বনিম্ন ৭.২। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    প্রতিদিন সকাল ১০টার পর সূর্যের দেখা মিললেও তাপ ছড়ানোর আগেই শুরু হয় ঠাণ্ডা বাতাস ও ঘন কুয়াশা।

    তেঁতুলিয়া আবহাওয়া কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, ‘তাপমাত্রার এই পর্যায়কে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। আগামী ৩ থেকে ৪ দিন মৃদু থেকে মাঝারি ঠাণ্ডা থাকবে।

    তীব্র শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগে পড়েছেন রিকশা ভ্যান চালক, কৃষি শ্রমিকসহ শ্রমজীবী ​​মানুষ। ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

    মঙ্গলবার সকালে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শিশু ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শিশু রোগীদের থাকার জায়গা নেই। এ ছাড়া প্রতিদিন হাসপাতাল থেকে দুই থেকে তিন শতাধিক রোগীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

    এদিকে বৃহস্পতিবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি এলাকার সাবিহা সাবা নামে ৩৩ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

    হঠাৎ করে শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

    সদর উপজেলার আমারখানা ইউনিয়নের মডেলহাট এলাকার ওসমান গণির স্ত্রী মালেকা বেগম তার এক মাসের শিশুকে ডায়রিয়া ও পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

    তিনি বলেন, আমি এখানে তিন দিন ধরে আছি। চিকিৎসায় এখন কিছুটা ভালো।

    ময়দানদীঘি এলাকার শাহিনা বলেন, আমার এক বছরের শিশু আদিলকে নিয়ে আমি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। তিনি গত তিন দিন ধরে কাশি ও জ্বরে ভুগছিলেন। ‘

    পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো: মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও শিশুরা বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। আমরা চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি। বিকেলে বাচ্চাদের বাইরে না নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছি। এ সময় পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের পাশাপাশি ঠান্ডা ও বাসি খাবার পরিহার করতে হবে। ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডাজনিত অসুস্থতা দেখা দিলেই তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা উচিত। ‘

    মন্তব্য করুন