• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    মৃত্যুর দায় নেয় না কেউ,সাফাই শুদু ‘সুষ্ঠু ভোটের’ ইউপি নির্বাচনে পাঁচ ধাপে সহিংসতায় ১২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন

    চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু থেকেই সংঘর্ষ চলছে। পঞ্চম দফার ভোটের দিন ৫ জানুয়ারি নির্বাচনী সহিংসতায় ১৩ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন শতাধিক। এর আগে চার দফা সহিংসতায় ১১৩ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ শ্রমজীবী ​​মানুষও রয়েছেন। তৃণমূল রাজনীতির এক সময়ের ভোট উৎসব এখন মানুষের উদ্বেগ ও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বারবার বলেছেন, মৃত্যুর দায় ইসি নেবে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল এবং সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের দায়িত্ব নিতে হবে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বলছে, এই মৃত্যুর জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী নয়। এমন সহিংসতা ইউপি নির্বাচনে প্রতিনিয়তই ঘটছে। তবে সহিংসতার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি অংশ না নিলেও তাদের স্থানীয় অনেক নেতাকর্মী এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এবং জয়ী হচ্ছেন। সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে অংশ নেয়। তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। ক্ষমতাসীন দলও দায়ী।

    বিএনপি দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ায় এবারের নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে সহিংসতার জন্য দলীয় প্রতীক বরাদ্দকেও দায়ী করছেন কেউ কেউ। কিন্তু যেসব জেলায় আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক দেয়নি সেখানে সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে।

    বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারের ভোটে অনেক অনিয়ম হয়েছে। অনেক জায়গায় নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ফলে বিজয় নিশ্চিত করতে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা আইন-কানুন লঙ্ঘন করে পেশিশক্তির ওপর ভরসা রেখেছেন। এসব অনিয়ম ও সন্ত্রাস বন্ধে ইসির হাতে অনেক ক্ষমতা থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে সংঘর্ষ ও সংঘর্ষ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা আরও বলেন, শুরু থেকেই দল ও প্রার্থীদের কঠোরভাবে আচরণবিধি মেনে চলতে বাধ্য করা সম্ভব হলে সহিংসতা শূন্যের কোঠায় আনা সম্ভব।

    আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত, শুধুমাত্র ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৬৭২টি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১১৩ জন নিহত এবং ৭,২০১ জন আহত হয়। এরপর ৫ জানুয়ারি পঞ্চম দফার ভোটে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়।

    জয়

    মন্তব্য করুন