• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সুপারিশ করেছে

    জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের কাতার থেকে উত্তরণের সুপারিশ করে একটি যুগান্তকারী প্রস্তাব পাস করেছে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশের স্থান হওয়ার অপেক্ষায় এবার। মঙ্গলবার কাউন্সিলের ৭৬ম সভার ৪০তম পূর্ণাঙ্গ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

    জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা বুধবার রাতে এক টুইট বার্তায় এ কথা জানান। তিনি লিখেছেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাস করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর চেয়ে বড় উৎসব আর কী হতে পারে! জাতির আশা আকাঙ্খা এবং প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০২১ পূরণ হয়েছে। জয় বাংলা। ‘

    এদিকে জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাশাপাশি নেপাল ও লাওসের ক্ষেত্রেও একই সুপারিশ করা হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিতে এই তিনটি দেশের পাঁচ বছর সময় থাকবে। যদিও প্রস্তুতির জন্য সাধারণত তিন বছর সময় দেওয়া হয়। করোনার কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

    এর আগে গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছিল।

    স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭১ সালে প্রথম স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা করা হয়েছিল। ১৯৭৫সালে বাংলাদেশ এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। সবকিছু ঠিক থাকলে, পাঁচ বছর পর, বাংলাদেশ এলডিসি ছেড়ে অন্য উন্নয়নশীল দেশ কাতারে চলে যাবে।

    এলডিসি থেকে উত্তরণ বাংলাদেশের উন্নয়নের আরেকটি মাইলফলক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এটি হবে বাংলাদেশের একটি বড় ব্র্যান্ডিং। বিশ্ব বার্তা পাবে যে অর্থনীতি বিকশিত হচ্ছে এবং বড় বাজার তৈরি হচ্ছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের শর্তগুলির মধ্যে একটি হল অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের মানদণ্ড পূরণ করা। বাংলাদেশ এই শর্ত পূরণ করতে সক্ষম, অর্থাৎ অর্থনীতিতে তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকি রয়েছে। এই বিষয়গুলো বিনিয়োগকারীদের ধারণার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

    এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ আঞ্চলিক বা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানির সুবিধা পায়। ওষুধ রপ্তানির ক্ষেত্রে, আন্তর্জাতিক মেধা সম্পত্তি প্রবিধান থেকে অব্যাহতি রয়েছে। অন্যদিকে উন্নয়ন সহযোগীরা কম সুদের হারে এবং সহজ শর্তে ঋণ দেয়। এলডিসি না থাকলে এসব সুবিধা বাড়বে।

    সিডিপি সুপারিশ করে যে কোন দেশগুলো এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবে। এ জন্য পরপর তিন বছর বার্ষিক এলডিসি মূল্যায়ন করা হয়। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এই তিনটি সূচক নির্ধারণ করে একটি দেশ উন্নয়নশীল হতে পারে কিনা। যোগ্যতা অর্জনের জন্য হয় যোগ্যতার প্রয়োজন হয় অথবা মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করতে হয়।

    বর্তমানে ৪৮টি স্বল্পোন্নত দেশ রয়েছে। এখন পর্যন্ত মালদ্বীপ, বতসোয়ানা, নিরক্ষীয় গিনি, সামোয়া এবং কেপ ভার্দে এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।

    মন্তব্য করুন