শনিবারের মধ্যে বাসে অর্ধেক ভাড়া চালু করার আল্টিমেটাম শিক্ষার্থীদের
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া আদায়ের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শত শত শিক্ষার্থী। ঢাকা কলেজের সামনে মিরপুর রোড অবরোধ করে বাসের অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। অবরোধ তুলে নেওয়ার পর শনিবার থেকে বাসে অর্ধেক ভাড়া শুরু করার আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। দাবি মানা না হলে ফের আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৫০টি বাস ছাড়ে রাইদা
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান, শনিবারের মধ্যে অর্ধেক ভাড়া নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। বলেই রাস্তা ছেড়েছি। শনিবারের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া না পাওয়ায় ঢাকা কলেজের সামনের সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ সময় কয়েকটি বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজের সামনের সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে তারা অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিদিন অনেক শিক্ষার্থী এ পথ ব্যবহার করলেও তাদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো বাসের চালক ও হেলপাররা শিক্ষার্থীদের দুর্ব্যবহার করে। অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে বাস অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা।
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান, সরকার অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার নির্দেশনা দিলেও বাস চালকরা অর্ধেক ভাড়া নেয় না। এ কারণে আমরা গাড়ি আটকে দিয়েছি। বাস মালিকদের এখানে এসে অর্ধেক ভাড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাস নিতে হবে।
এবার অঘোষিত বাস ধর্মঘটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এর আগে রাইডার বাসে চড়ে অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার পর এক শিক্ষার্থীকে হয়রানি করা হয়। তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। সোমবার বিকেলে রামপুরায় বিটিভি ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাজধানীর পোস্তগোলা থেকে দিয়াবাড়ি এলাকায় চলাচলকারী রাইদা পরিবহনের অন্তত ৫০টি বাস ঘুরিয়ে দেয়, যা শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়ায় থামিয়ে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আসন সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেয়।
মঙ্গলবার চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইতে বাসে উঠা এক শিশু চলন্ত অবস্থায় নিচে পড়ে মারা যায়। সোমবার ফের রাইদা পরিবহনের বেপরোয়া আচরণের শিকার ওই ছাত্রী।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রাইদা পরিবহনের অর্ধশত বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ, শিক্ষার্থী ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের বৈঠকে অর্ধেক ভাড়া নিতে রাজি হলে বাসগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, ইম্পেরিয়াল কলেজের এক শিক্ষার্থী প্রগতি সরণি থেকে রাইদা পরিবহনের বাসে ওঠে। বাসের কন্ডাক্টর তার কাছে ভাড়া চাইলে ছাত্রটি তার পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভাড়ার অর্ধেক পরিশোধ করে। রামপুরা পর্যন্ত কন্ডাক্টর ও হেলপারের সঙ্গে ছাত্রীর বাকবিতণ্ডা হয়। বাসটি বিটিভি ভবনের সামনে গেলে হেলপার তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেন। ঘটনাটি তার বন্ধুদের জানালে তারা সেখানে জড়ো হয়ে সড়কে চলাচলকারী রাইদা পরিবহনের বাসগুলো থামিয়ে দেয়।
ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ, মিরপুরে বাস থামিয়েছে
শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে রামপুরা রোড থেকে রাইদা পরিবহনের বাসগুলো রাস্তার পাশে থামিয়ে দেয়। তারা বিকেল ৩টা পর্যন্ত অন্তত ৫০টি বাস থামিয়ে দেয়। এরপর তারা পরিবহন এবং নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আসন সংরক্ষণসহ সকল বাসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে বিক্ষোভ করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, রাইদা পরিবহনের কর্মকর্তাদের থানায় ডেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। পুলিশও আলোচনায় অংশ নেয়। বিকেলে তিন পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। পরিচয়পত্র দেখানোর পর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে রাইদা পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বাসে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে পুরুষদের বসানো হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তারা। এরপর শিক্ষার্থীরা বাসগুলো ছেড়ে দেয়।