বাবার লাশ ৩৬ ঘন্টা আটকে রাখা হয়েছে
উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে দাফনের আগে এক ব্যক্তির লাশ প্রায় ৩৬ ঘন্টা আটকে রাখা হয়েছিল। গতকাল রবিবার (২১ ডিসেম্বর) পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড, ফটিকা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মো. সেকান্দর মিয়া (৭০)। জীবদ্দশায় তিনি দুবার বিয়ে করেছিলেন। তবে, প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। প্রথম বিয়েতে তার পাঁচটি সন্তান এবং দ্বিতীয় বিয়েতে তিন সন্তান ছিল। মৃত্যুর আগে দ্বিতীয় বিয়ের সন্তানদের সম্পত্তি থেকে প্রথম বিয়ের সন্তানদের বঞ্চিত করার প্রতিবাদে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সেকান্দর মিয়া জীবদ্দশায় জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন। তার গ্রাম উপজেলার মেখল ইউনিয়নের বাদামতল, কিন্তু বহু বছর ধরে তিনি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড, ফটিকা গ্রামে প্রাক্তন উপজেলা চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আলমের বাড়ির কাছে নিজস্ব ভবনে (নকশু ভিলা) বসবাস করছেন। এর আগে গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে সেকান্দার মিয়া মারা যান। জানা গেছে, তার বাবার মৃত্যুর খবর শুনে তার প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা পৌরসভার ফটিকা গ্রামের নকশু ভিলায় জড়ো হয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে তাদের বাবার সম্পত্তির অংশ দাবি করে এবং তার বাবার লাশ দাফনে বাধা দেয়।
সেকান্দার মিয়ার প্রথম বাড়ির বড় মেয়ে আয়েশা আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, “আমরা প্রথম বাড়ির সন্তান। সম্পত্তির আমাদের অংশের ব্যাখ্যা না দেওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের বাবার লাশ দাফন করতে দেব না।” সম্পত্তির জন্য বাবার লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অল্প সময়ের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাইরাল হয়ে গেলে তা ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি করে।
এদিকে, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিনের নজরে এলে তিনি হস্তক্ষেপ করেন এবং থানায় অবহিত করেন। পরে, ইউএনও এবং থানার হস্তক্ষেপে তারা তাদের ঘোষণা প্রত্যাহার করে, আশ্বাস দেন যে প্রথম বাড়ির সন্তানরা তাদের সম্পত্তির অংশ পাবে। পরে, প্রায় ৩৬ ঘন্টা পর, গতকাল রবিবার মাগরিবের নামাজের পর বৃদ্ধের দাফন সম্পন্ন হয়, মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. জালাল উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।

