রাজনীতি

‘বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার মাধ্যমে শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে হবে’

পিরোজপুর-১ আসনের জামায়াতে ইসলামীর এমপি প্রার্থী মাসুদ সাঈদী বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও আমরা কাঙ্ক্ষিত বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারিনি।’ গতকাল মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখা আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশটি শহরের সিও অফিস থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাউন ক্লাবে বিজয় সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয় এবং জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসেন ফরিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
একই সাথে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ যে স্বপ্ন নিয়ে পরিচালিত হয়েছিল, ১৯৯০ সালে এক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল এবং ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজও বাস্তবায়িত হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা প্রতিটি আন্দোলন ও অভ্যুত্থানে রক্তপাত করেছেন এবং জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের কেবল একটিই দাবি ছিল: বাঙালি জাতি পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তারা বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত এবং শোষণমুক্ত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।’
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘আমরা যদি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্তঋণ শোধ করতে চাই, তাহলে আমাদের বৈষম্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো যারা কেবল স্বাধীনতার চেতনার কথা বলেছিলেন তারা সেই চেতনা তাদের হৃদয়ে ধারণ করেননি। তাদের অনেকেই দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, ডাকাত এবং সন্ত্রাসী হয়ে উঠেছে।’ জামায়াত নেতা বলেন, ‘জামায়াত ইসলামী কেবল মুখে স্বাধীনতার কথা বলে না, তারা তা হৃদয়ে ধারণ করে। আজ যদি আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং বৈষম্যমুক্ত প্রকৃত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। মুক্তিযুদ্ধের যোদ্ধা এবং জুলাইয়ের যোদ্ধারা এ দেশের সূর্যের সন্তান। যদি আমরা তাদের যথাযথ সম্মান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আর কোনও নতুন যোদ্ধা তৈরি হবে না।’
মাসুদ সাঈদী আরও বলেন, ‘হাদির উপর আক্রমণ কোনও ব্যক্তির উপর আক্রমণ নয়। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর সরাসরি আক্রমণ। এর বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে। আমরা কেবল কথায় নয়, আমাদের হৃদয়েও স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করি। প্রকৃত দেশপ্রেম মানে সততা, ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতা। দেশের কোনও থানায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের কোনও নেতা বা কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজির কোনও মামলা নেই। এতেই প্রমাণিত হয় স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা কী এবং প্রকৃত দেশপ্রেম কী।’ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা শেখ আব্দুর রাজ্জাক, পৌর আমীর মো. ইসহাক আলী খান, ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মো. ইমরান খান এবং বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।