• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    সিনহাকে লিয়াকত গুলি করেন এবং প্রদীপ তাকে বুট দিয়ে গলা চেপে ধরেন: আদালতে সিফাত

    চাঞ্চল্যকর মেজর (অব) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় শহিদুল ইসলাম সিফাত মঙ্গলবার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তার সাক্ষ্যে তিনি সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করেছেন।

    আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে সিফাত বলেন, “ওই দিন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী বাহারছড়া চেকপোস্টে সিনহার গাড়ি থামিয়ে দেন। সিনহা গাড়ি থেকে হাত উঁচু করে নামার সময় লিয়াকত গুলি করেন। সিনহা মাটিতে পড়ে যান কিন্তু দীর্ঘ সময় বেঁচে ছিলেন। পরে, অভিযুক্ত ওসি প্রদীপ এসে সিনহার বুকের বাম পাশে লাথি মারে।তারপর সে বুট জুতা দিয়ে গলায় চেপে ধরেন, মেজর (অব) সিনহা এতে মারা যান।

    এর আগে, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মামলার আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসকে আসামির আইনজীবীরা জেরা করেন। অভিযুক্ত প্রদীপ কুমার দাস, লিয়াকত আলী এবং লিটন মিয়াকে তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাস গুপ্ত, অ্যাডভোকেট সৈকত কান্তি দে এবং অ্যাডভোকেট চন্দন দাস বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত জেরা করেন।

    সিনহার সহযোগী সহিদুল ইসলাম প্রকাশ সিফাত তখন হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। রাত ৮ টা পর্যন্ত তার সাক্ষ্য চলে।

    এদিন সকালে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে আসামি লিয়াকত আলীর আইনজীবী বাদী শারমিন ফেরদৌসকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এটি দুপুর ২ টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল দুপুর ২ টার পর এক ঘণ্টার জন্য আদালত মুলতবি করেন। স্থগিতাদেশের পর আদালত পুনরায় তার আহ্বান শুরু করেন এবং লিয়াকত আলীর পক্ষে তার আইনজীবী বাদীর জেরা পুনরায় শুরু করেন। অপর দুই আসামি ওসি প্রদীপ এবং লিটন মিয়ার আইনজীবী তাকে বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

    অভিযুক্ত প্রদীপ ও লিয়াকতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাস গুপ্ত মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন: আমরা আদালতকে এ বিষয়ে অবহিত করেছি। তিনি বলেন, ‘হত্যার পর থেকে অভিযুক্তের মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে চরিত্র হনন করা হচ্ছে। তিনি ন্যায়বিচারের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

    এর আগে সোমবার সকালে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের সাক্ষ্য দিয়ে মেজর সিনহার হত্যার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। প্রথম দিনে আইনজীবীরা ১২ জন আসামির পক্ষে বাদীকে জেরা করেন।

    মামলার প্রধান আসামি ছিলেন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলী ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাসকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। মামলার তৃতীয় আসামি ছিলেন টেকনাফ পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত। আদালত মামলার তদন্তের দায়িত্ব র‌্যাব -১৫ কে দিয়েছে।

    মামলার তদন্তের সময় অভিযুক্ত পুলিশের ৭ জন সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে, র‌্যাব হত্যার সাথে জড়িত ৩ জন স্থানীয়, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ জন সদস্য এবং মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করে। মামলার আসামি কনস্টেবল সাগর দেব ২৪ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এই মামলার ১৫ জন আসামি এখন আইনের অধীনে কারাগারে আছেন।

    মন্তব্য করুন