বাংলাদেশ

গাইবান্ধায় শিবির নেতার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় উত্তেজনা, সড়ক অবরোধ

গাইবান্ধার সাঘাটা থানার কাছে একটি পুকুর থেকে শিবির নেতার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে একদল বিক্ষুব্ধ মানুষ। মানববন্ধনের পর বিক্ষোভকারীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। শনিবার (২৬ জুলাই) গাইবান্ধায় নিহত যুবকের স্বজন, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, সহপাঠী এবং সাধারণ মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়। পরে রাস্তা অবরোধ করা হলে পুলিশ প্রথমে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে তদন্তের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। গাইবান্ধা জেলা শিবির সভাপতি মো. রুম্মান ফেরদৌস বলেন, সিজু ধার্মিক, মেধাবী এবং সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। সিজুর এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশের রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়া এবং থানার ভেতরে ছুরিকাঘাতের পেছনে আর কী কারণ রয়েছে তা তদন্ত করা উচিত। এ ব্যাপারে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অভিযান) শরিফুল আলম বলেন, “সিজু ডুবে মারা গেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। আমরা পুরো ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। শীঘ্রই রহস্যের সমাধান হবে। দোষীদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।” জানা গেছে, নিহত যুবকের নাম সিজু মিয়া। তিনি শিবিরের গাইবান্ধা সদর উপজেলা গিদারী ইউনিয়ন শাখার সভাপতি। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে কচুরিপানায় ভাসমান অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এরপর জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। সিজুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে থানায় ঢুকে পুলিশের উপর আক্রমণ এবং অস্ত্র চুরির চেষ্টা করে। সিসিটিভি ফুটেজেও পুলিশের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। দেখা যাচ্ছে, সিজু একজন কনস্টেবলের রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিছু লোক তাকে গ্রেপ্তার করতে এলে সে তাদের উপরও আক্রমণ করে। ফুটেজে স্পষ্ট না হলেও দাবি করা হচ্ছে যে সে পুলিশকেও ছুরিকাঘাত করেছে। পুলিশের মতে, সিজু একটি চুরি করা মোবাইল ফোন কিনেছিল। প্রযুক্তির সাহায্যে জানার পর, সিজুকে থানায় ডাকা হয়। সে বলে যে সে মোবাইল ফোনটি একটি দোকান থেকে কিনেছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ দোকানদারকেও ডাকে। থানায় তথ্য সংগ্রহ করার সময় সিজু একজন পুলিশের সাথে তর্ক শুরু করে। তারপর হঠাৎ সে রেগে যায় এবং বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। এক পর্যায়ে সিজু থানা থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যায়। সেই দৃশ্যটি সিসিটিভি ক্যামেরায়ও ধরা পড়ে। তারপর থেকে তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরের দিন, থানার পাশের একটি পুকুর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।