জাতীয়

ব্যবসার নামে অফিস দখলের অভিযোগ এআরও জালালের বিরুদ্ধে

ব্যবসার নামে অফিস ভাড়া নিয়ে দখলে রাখার অভিযোগ ওঠেছে কাস্টমসের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় প্রায় ৪ হাজার স্কয়ার ফুটের ফ্লোর দখলে রেখেছেন। নগরীর বারিক বিল্ডিং মোড়ে প্রগতি ভবনের মালিককে জিম্মি করে ওই ভবনের ভাড়াও দিচ্ছেন না ছেড়েও দিচ্ছেন না। এতে মালিকপক্ষ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন মিয়া সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) হিসাবে কর্মরত।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে গবাদি পশুর খাদ্য পরিক্ষাগার ‘বায়ো সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন লিমিটেড’ নামে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন জালাল। চট্টগ্রামের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাণিজ্যিক এলাকায় বিশাল ফ্লোর ৫ বছরের জন্য ভাড়া নিয়ে অফিসের সাজসজ্জার কাজ সম্পন্ন করেন। নিয়োগ দেন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী। বায়ু সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক করা হয়েছিল জালালের চাচা মোহাম্মদ মিজানকে। কিন্তু শুরুতেই চাচা-ভাতিজার মধ্যে সমস্যা দেখা দিলে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ-ছাটাই চলতে থাকে। লোক নিয়োগ আর ছাঁটাইয়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে ‘মুসকাল’ হয়ে যায়। ওই অফিসে বর্তমানে ‘মুসকাল’ নামেই সাইনবোর্ড দেখা গেছে।
মালিকপক্ষ জানায়, চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে কিন্তু অফিস ছেড়ে দিচ্ছেন না। অনেক টাকা বকেয়া ভাড়া জমেছে সেগুলোও পরিশোধ করছে না। এতে ফ্লোরটি অন্য কাউকে ভাড়া দেওয়া যাচ্ছে না। নিয়মিত যোগাযোগও রাখেন না।
সূত্র জানায়, ১০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে এআরও হিসাবে কর্মরত ছিলেন জালাল উদ্দিন মিয়া। চট্টগ্রাম থেকে খুলনা এবং সেখান থেকে সিলেট বদলি হন। সিলেট চাকরি করলেও পরিবার নিয়ে রাজধানী ঢাকায় থাকেন। ঢাকায় ব্যক্তিগত ফ্ল্যাটের পাশাপাশি চট্টগ্রামে একাধিক ব্যবসা ও সম্পদ রয়েছে।
ফরিদপুরের বাসিন্দা জালাল সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হলেও কাস্টমসের চাকরি সূত্রে প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে পরিচয়কে কাজে লাগিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের দোসর আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী নেতাদের ব্যবহার করেছেন প্রয়োজনে। পাশাপাশি পেশাগতভাবে শক্তিশালী কর্মকর্তাদেরও অংশিদার করেছেন। তার প্রতারণা ও অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে অধিকাংশই তাকে ছেড়ে গেছেন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে নিজেকে বিএনপি পরিচয় দিয়ে বিএনপি নেতাদের দাপট দেখাচ্ছেন।
সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মো. তাসনিমুর রহমান আমাদের সময়কে বলছেন, সরকারি কর্মচারীর ব্যক্তিগত চাকরি বা ব্যবসার সুযোগ নেই। তবে এআরও জালাল উদ্দিন মিয়ার ব্যক্তিগত বিষয়ে তিনি অবগত নন।
জানতে চাইলে জালাল উদ্দিন মিয়া আমাদের সময়কে জানান, নতুন ধনের একটি ব্যবসা শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নানা কারণে সেটি শুরু করা যায়নি। অফিসে ল্যানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। তবে জটিলতা দেখা দেওয়ায় ব্যবসা শুরু করতে পারছেন না। ফলে অফিস ছাড়তে পারছেন না। ভাড়া না দিয়ে অফিস দখলের বিষয়ে বলেন, বিনিয়োগকারী না পাওয়ায় এখন আর্থিক সংকট চলছে তাই ভাড়া দিতে পারছি না। অফিস কেন ছেড়ে দিচ্ছেন না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যন্ত্রপাতি বিক্রি করতে না পারায় বিক্রি করতে না পারায় অফিসও ছাড়তে পারছি না। আমি চাই ব্যবসাটি শুরু করতে।