ঢাকার প্রায় ১৮ টি হাসপাতালে সিন্ডিকেট। লাশ নিয়েও অনৈতিক ব্যবসা।
অ্যাম্বুলেন্সের চাকা কমিশন ছাড়া ঘোরে না, করোনাকালে ভাড়া বেড়েছে।
‘ওদের মানবতা বলে কিছুই নেই। ঢাকা শহরে মারা যাওয়া মানে আমাদের মতো মানুষের বিপদের। গ্রামে লাশ নিয়ে যেতে কত ঝামেলা। অ্যাম্বুলেন্সের চালক ১০ হাজার টাকার কম নেননি। আমি তাই বলেছি, কিছুটা কমাতে। কে পাত্তা দেয়। ‘বরগুনার বেতাগীরের কৃষক আব্দুর রশিদ (৭৫) বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিভারের বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন। তার বাবার লাশ গ্রামে নিয়ে যাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলার সাথে সাথে রশিদের কন্যা লিপি আক্তার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
‘ভাই রে, আমরা খুব গরীব। ছোট ভাই এত দিন ঢাকায় ভ্যান চালাচ্ছিল। মগবাজারের বিস্ফোরণে আমি তাকে হারিয়েছি। কখন কাঁদতে হবে – কীভাবে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যায়, তাই উদ্বেগ শুরু হয়। আমি এত টাকা কোথায় পাব? আত্মীয়স্বজন এবং ভাইবোনরা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য খরছ যোগায়। আমি ১৯ হাজার টাকায় দুটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করি। লকডাউন, তাই ভাড়া ডাবল। তবে সমস্ত যানবাহন লকডাউনে বন্ধ সবাইকে অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামে যেতে হবে।
কেবল লিপি আক্তার বা মুন্না মন্ডলই নয়, তাদের মতো প্রায় প্রত্যেকেই অ্যাম্বুলেন্স সেবাপেতে বেদনাদায়ক পরিস্থিতির মুখোমুখি হন।
যশোর শার্শা বাগমচারা শনিবার সকালে আক্তারুজ্জামান করোনা আক্রান্ত হয়ে মফিজুর রহমান (৪৩) ঢাকায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তবে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে তাকে প্রথমে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাকে সেখান থেকে ঢাকায় আনতে ৩৫,০০০ টাকা খরচ হয়। লাশ নিতে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
করতে বাধা দেয়।
দেখা গেছে যে অ্যাম্বুলেন্সের মালিকদের কাছ থেকে বড় কমিশন প্রাপ্ত অসাধু সদস্যরা দিনে ২৪ ঘন্টা সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতালে সক্রিয় থাকেন। তাদের সাথে ‘প্যাকেজ চুক্তি’ না করা হলে ময়না তদন্ত ও পুলিশি ছাড়পত্র পাওয়ার পরেও নিহতের স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হবে। সরকারী নীতিমালা না থাকায় তারা অ্যাম্বুলেন্সের কল্পিত ভাড়া আদায় করে যানবাহন । যেমন দেখা যায়, বেশিরভাগ অ্যাম্বুলেন্সে প্রায়শই ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও থাকে না।
দেশে বর্তমানে আট হাজারেরও বেশি বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মানের অ্যাম্বুলেন্সগুলি খুব কম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, অ্যাম্বুলেন্স খাতে কোনও নীতিমালা না থাকায় দেশের মানুষ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। নীতিমালার জন্য হাইকোর্টে একটি রিটও করা হয়েছে।