সাইবার অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ‘কাউন্টার ন্যারেটিভ’ প্রচার করা হবে
দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ‘পাল্টা বর্ণনা’ প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা উপদেষ্টা পরিষদের ৭ম সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি সব পুলিশ ইউনিটে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠি অনুযায়ী গৃহীত কার্যক্রমের প্রতিবেদনও ৮ মার্চের মধ্যে পুলিশ সদর দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আইনশৃঙ্খলা উপদেষ্টা পরিষদের ৭ম সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য ও ভিত্তিহীন অডিও-ভিডিও অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণে একটি ‘পাল্টা বর্ণনা’ প্রস্তুত করা হবে এবং প্রতিটি বিভাগ বা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব মুখপাত্রের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানানো হবে। এ ছাড়া সরকারবিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, দল ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে নানা ধরনের মিথ্যা প্রচার বা অপপ্রচারের মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি ও জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সজাগ ও তৎপর থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রায়ই সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনসহ বাংলাদেশকে নিয়ে গুজব বা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সত্য জনগণের সামনে তুলে ধরতে ‘কাউন্টার ন্যারেটিভ’ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একটি ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা রুমার স্ক্যানার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর ২৭১ টি প্রমাণ পেয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া এসব মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করে সংস্থাটি।
গুজব স্ক্যানার রিপোর্ট করেছে যে রাজনৈতিক বিষয়ে ১১৪টি ভুল তথ্য ছড়ানোর সবচেয়ে বেশি প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা মোট ভুল তথ্যের ৪২ শতাংশ। এছাড়া ৬৭টি জাতীয়, ২৯টি আন্তর্জাতিক, ১৮টি ধর্মীয়, ১৫টি বিনোদন ও সাহিত্য, ৯টি শিক্ষা, ৬টি প্রতারণা এবং ৫টি খেলাধুলা।
সাম্প্রদায়িক ভুল তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি বেশ কয়েক মাস ধরে আলোচনার মধ্যে রয়েছে। গুজব স্ক্যানার জানুয়ারিতে এমন ৩২টি সাম্প্রদায়িক ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে ২৫টি ক্ষেত্রে, ভারতীয় অ্যাকাউন্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার পৃষ্ঠাগুলি থেকে ভুল তথ্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে অসত্য, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। এতে দেশের বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার এবং জনমনে উদ্বেগ, বিদ্বেষ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
Do Follow: greenbanglaonline24