সর্বাত্মাক লকডাউনে’- খোলা থাকবে শিল্পকারখানা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ১৪ ই এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য”সম্পূর্ণ লকডাউন” ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার এই লকডাউনে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করবে। অফিস, আদালত এবং শপিংমল সহ সকল ধরণের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে রফতানিমুখী শিল্পগুলি উন্মুক্ত থাকবে। একই সময়ে, সীমিত অর্থনৈতিক কার্যকলাপ থাকবে। সরকার সোমবার সাত দিনের সাধারণ ছুটির ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের সাধারণ ছুটির দিনে কারখানার ভিতরে রেখে কাজ করানো যাবে। আপনি যদি কারখানার ভিতরে না থাকেন তবে আপনাকে অফিসে যেতে হবে। এ সময় সব ধরণের যানবাহন বন্ধ থাকবে। আন্তর্জাতিক বিমানও বন্ধ থাকবে।
রবিবার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রজ্ঞাপন সম্পর্কিত একটি অনলাইন সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। সভার পরে রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক অনুমোদনের জন্য প্রজ্ঞাপনের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিলে আজ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর সাধারণ ছুটির দিনে জিনিসগুলি যেভাবে চলছিল, তা আবার একই রকম হতে পারে। অন্যান্য জরুরী-সংক্রান্ত সমস্যাগুলি গত বছরের মতোই চলতে থাকবে। ট্রেন, প্লেন ও লঞ্চ সহ গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। গত বছরের ২৬ শে মার্চ থেকে প্রথম দশ দিনের ছুটি সাধারণ হিসাবে ঘোষণা করা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ৬৬দিন করা হয়। প্রথমদিকে, জরুরি সেবা ব্যতীত প্রায় সমস্ত কিছুই বন্ধ ছিল, তবে এক পর্যায়ে রফতানিমুখী শিল্পসহ কয়েকটি বিষয়কে ছাড় দেওয়া হয়।
সরকারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, সাত দিনের লকডাউন চলাকালীন লোকেরা বাড়ির বাইরে না গিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কেবলমাত্র জরুরি সেবা তখন পাওয়া যাবে। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে লকডাউন বা সরকারী ছুটির দিনগুলিও বাড়তে পারে।
পুলিশ প্রস্তুতি: করোন ভাইরাস সংক্রমণ রোধে পুলিশ বিভাগ সর্বত্র ‘ব্যাপক লকডাউন’ বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সরকার লকডাউন বা সাধারণ ছুটির ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে পুলিশ নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে মাঠে নেবে। কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন সে সম্পর্কে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির পরে সারাদেশের থানায় বার্তা প্রেরণ করা হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রজ্ঞাপনে নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোরতা দেখানো হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো।.শফিকুল ইসলাম বলেন, অল-আউট লকডাউন বা সাধারণ ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি করা হলে সেখানকার পুলিশের দায়িত্ব কী হবে তা বোঝা যাবে। পুলিশ যেহেতু নির্দেশাবলী উপলব্ধ রয়েছে তা অনুসরণ করতে প্রস্তুত।
পুলিশ সদর দফতরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা বলেন যে করোন ভাইরাস বিস্তার রোধে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে তার আলোকে তারা কাজ করবে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, লকডাউন শুরু হলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঢাকাসহ বিভিন্ন মহানগরের প্রবেশ ও প্রস্থান পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি মহাসড়কগুলিতেও যান চলাচলে বাধা দেওয়া যেতে পারে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য চট্টগ্রাম রেঞ্জের সব জেলাতেই পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ এগুলি কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে মাঠে থাকবে।