• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    সড়ক অবরোধকারীদের সড়াতে গিয়ে উল্টো হামলার শিকার হলেন ইউএনও

    চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ইটভাটার মাটি টানা  ট্র্যাক্টরের চাকায় চাপায় পিষ্ট হয়ে আহিদুল বিশ্বাস (৪০) নামে এক সাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তার সাত বছরের ছেলে ইয়াসিন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কাটাপোল দক্ষিণপাড়ায় কাটাপোল-মিনাজপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কিন্তু তিনি সেখানে গেলে উত্তেজিত জনতা তাকে ধাওয়া করে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

    নিহত অহিদুল বিশ্বাস জেলার মহেশপুর উপজেলার শঙ্করহুদা বাতাঙ্গাছি গ্রামের মৃত শমসের বিশ্বাসের ছেলে।

    স্থানীয়দের মতে, কাটাপোল গ্রামের মাঠ থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু সরিয়ে ইটভাটায়  নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পঞ্চাশটি ট্রাক্টর প্রতিদিন বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। এই দ্রুতগতির যানবাহনের কারণে ওই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। কাটাপোলের গ্রামবাসীরা এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ। গ্রামবাসীরাও এ বিষয়ে প্রতিকারের জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলেন। তবে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার বাবা-ছেলে  দুর্ঘটনার শিকার হলে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হন।

    স্থানীয়রা জানায়, অহিদুল বিশ্বাস দুপুরে বাচ্চা ইয়াসিনকে নিয়ে সাইকেলে শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন। তারা কাটাপোল গ্রামে পৌঁছলে একটি ট্রাক্টর তাদের পিষ্ট করে। আহিদুল ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং ইয়াসিনের পা ভেঙে যায়।

    বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধ করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুনিম লিংকন ঘটনাস্থলে যান এবং বিক্ষুব্ধ লোকজন তাকে আক্রমণ করে। ইউএনও তার জীবন বাঁচাতে দৌড়ে গেলে, বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে ধাওয়া করে। ইউএনও তখন একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। লোকজন সেখানে আক্রমণও করে।

    পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম ও হাসাদাহ ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বিশ্বাসকেও আক্রমণ করা হয়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ইউএনওকে উদ্ধার করে।

    জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, বাবা-ছেলে ট্র্যাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে পড়ায় আন্দোলিত গ্রামবাসীরা ইউএনওকে বাধা দেয়। অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

    চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তাহের ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

    ইউএনও মুনিম লিংকন জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে তিনি স্থানীয় বালুচাষীদের জরিমানা করেন। কিন্তু তারপরেও তাদের সহিংসতা থামেনি। এদিকে বালু ও কাদামাটির ট্রাক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত জনতা ভুল বুঝে আমাকে আক্রমণ করে। পরে আমি আমার জীবন বাঁচাতে চলে গেলাম। এর মধ্যেই মাথায় ইটের আঘাতের ফলে আমি সামান্য আহত হয়েছি। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত।

    মন্তব্য করুন