জাতীয়

এলপিজির দাম এক মাসে দেড়গুণ।১২ কেজি সিলিন্ডার এখন ১২ শ ‘টাকা

এক মাসে, সিলিন্ডারে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম প্রায় দেড়গুণ বেড়েছে। জানুয়ারীতে, ১২ কেজি সিলিন্ডার ৮০০ থেকে ৯০০ রুপিতে পাওয়া যেত, এখন এটি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় কিনতে হবে। এই প্রয়োজনীয় জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ববাজারে কাঁচামাল (বুটেন, প্রোপেন) এর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশেও এর দাম বেড়েছে।

এলপিজি বিশ্বজুড়ে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী হিসাবে সমাদৃত। এটি পরিবারের, শিল্প, বাণিজ্যিক, মোটরগাড়ি এবং বিভিন্ন কারখানায় জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এলপিজি যখন গাড়িতে ব্যবহৃত হয়, তখন তাকে অটো গ্যাস বলে।

দেশের চাহিদার ৯৮% এলপিজি আমদানি করা হয়। এলপিজি বাজারের দাম কাঠামো নির্ধারণে উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গত মাসে জন শুনানি অনুষ্ঠিত হলেও বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

আমদানিকারকরা বলছেন, বিশ্ববাজারে এলপিজি বুটেন ও প্রোপেনের দাম গত কয়েক মাসে প্রতি টনে প্রতি আড়াইশ ‘র বেশি বেড়েছে। গত জুনে প্রতি টন দাম ছিল ৩৩০ থেকে ৪৪০ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে এটি ছিল প্রায় ৬০০ ডলার দাম বাড়ছে আমদানির ব্যয়ের কারণে দেশের বাজারেও।

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের এলপিজি খুচরা বিক্রেতা মানিত মিয়াজি জানান, জানুয়ারিতে একটি ১২ কেজি সিলিন্ডার ৮০০ থেকে  ৯০০  টাকায় বিক্রি হত। গত এক মাসে দাম তিনগুণ বেড়েছে এবং এখন এটি  সিলিন্ডারে প্রতি এক হাজার একশ থেকে একশ ‘টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। দাম বাড়ার সাথে সাথে বিক্রিও হ্রাস পেয়েছে।

রাজধানীর মন্দারের বাসিন্দা জেসমিন আক্তার বলেছিলেন যে প্রতি মাসে লাইন গ্যাসের দাম ৯০০ টাকা, এলপিজি প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা। দাম বাড়ার সাথে সাথে এখন এই ব্যয় বেড়েছে প্রায় তিন হাজার টাকা। এলপিজির দাম বাড়ানো দৈনন্দিন জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।

দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা এলপিজির পরিচালক ইয়াসিন আরাফাত বলেন, এলপিজি সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর খাত। বিশ্ব বাজারে এখন এর দাম বাড়ছে। তাই ব্যবসায়ীরা বেশি দামে এলপিজি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি বলেন, এলইপিসির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিইআরসি-র সকল বিষয় বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

এ প্রসঙ্গে বিইআরসি সদস্য মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, জনগণের শুনানির পরেও অনেক কাজ বাকি আছে। সমস্ত পক্ষের মতামত নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। বিশ্ব বাজারে এর দাম ওঠানামা করে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে দামের কাঠামোটি ঠিক করতে হবে।

এলপিজির দামও এর পরিবহণের উপর নির্ভর করে। বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলির গভীরতা কম হওয়ায় ছোট ছোট জাহাজে এলপিজি আনা হয়। ফলস্বরূপ, ব্যয় আরও বেশি। এশীয় বাজারে এলপিজির দামগুলি সৌদি আরব তেল সংস্থা আরামকোর দাম কাঠামো দ্বারা প্রভাবিত হয়।

বর্তমানে দেশে এলপিজি আমদানি ও সরবরাহের জন্য ২৯ টি সরকারী-বেসরকারী সংস্থা জড়িত রয়েছে। দেশে এলপিজি সরবরাহের সিংহের অংশ (৯৮%) ২৮ টি বেসরকারী সংস্থার মাধ্যমে।

মন্তব্য করুন