• বাংলা
  • English
  • বিবিধ

    চট্টগ্রামে জশনে জুলুসের প্রস্তুতি চলছে, ব্যাপক জনসমাগমের আশা

    চট্টগ্রাম: পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ২৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার)। এ উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও চট্টগ্রামে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। এটি জুলুসের ৫১তম আয়োজন। আয়োজকরা আশা করছেন, এবারের জুলুসে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগমের আশা করা হচ্ছে।

    বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

    দরবার আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরীফের হুজুর কেবলা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মাজিয়া) জুলুসের ইমামতি করবেন বলে জানানো হয়। উপস্থিত থাকবেন সাজ্জাদানশীন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মাজিয়া) ও শাহজাদা আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মাজিয়া)।

    আঞ্জুমানে রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় জুলুস অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামে। এটা এখন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। যা চট্টগ্রামের ইতিহাসে এক অবিচ্ছেদ্য সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ। আর আমরা চাই এই ঐতিহ্য গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে স্থান করে বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা লাভ করুক। এজন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকরা এই জুলুসকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরলে অবশ্যই গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে স্থান পাবে।

    এবারে জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহে কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তাইবিয়া থেকে সকাল ৮টায় জুলুস শুরু হবে। বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, কাতালগঞ্জ, চকবাজার আলীখান মসজিদ, প্যারেড মাঠের পশ্চিম পাশে, চট্টগ্রাম কলেজ, গণিবেকারি, খাস্তগীর স্কুল, আসকার দীঘি, কাজীর দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, দুই নম্বর গেট হয়ে জামিয়া মাদ্রাসা মাঠে আসবেন। জোহরের নামাজের পর দোয়া ও মোনাজাত করা হবে।

    সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের অতিরিক্ত সচিব মো. শামসুদ্দিন, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, জামিয়ার প্রিন্সিপাল আল্লামা আব্দুল আলিম রিজভী, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবু ইয়াহিয়া মোঃ মহসিন, গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোসাহেব উদ্দিন বখতেয়ার, মহানগর উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল্লাহ, উত্তর জেলা প্রশাসক মো. সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাস্টার হাবিব উল্লাহ, ট্রাস্টের মোঃ মাহবুবুল আলম, এনামুল হক বাচ্চু, জুলুস মিডিয়া কমিটির সমন্বয়ক দিলশাদ আহমেদ, আবু তালেব বেলাল প্রমুখ।

    সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উৎসবে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। আয়োজক কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জুলুসদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন নির্দেশনাও দেওয়া হয়। কলা, রুটি, কমলালেবু, চকলেট, সিরাপসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার বিতরণের জন্য আলাদা নির্দেশনা রয়েছে। কোনো দুর্ঘটনা বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না ঘটে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল জামান আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মাদ তৈয়ব শাহ (রহ.)-এর নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রথম জুলুস শুরু হয়। আঞ্জুমানের তৎকালীন সিনিয়র সহ-সভাপতি নূর মোহাম্মদ আলকাদেরীর নেতৃত্বে খানকাহ শরীফ, দীঘি পাড়, বালুয়ার, চট্টগ্রাম থেকে মিছিলটি বের হয়।

    আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ (রহ.) ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামে মিছিলের নেতৃত্ব দেন। তিনি ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত জুলুসের নেতৃত্ব দেন। তিনি ১৯৮৭ সাল থেকে বাংলাদেশে আসেননি। তখন থেকে হুজুর কেবলা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মাজিয়া) মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এটি তার নেতৃত্বে ৩৫তম জুলুস।