• বাংলা
  • English
  • রাজনীতি

    তৃণমূল বিএনপি পারবে, ভারতের তৃণমূল কংগ্রেস যেমন পেরেছ!

    বিএনপির সাবেক নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়ে নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন। দলীয় সরকারের অধীনেই তারা নির্বাচনে যাবেন বলে জানিয়েছেন। মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে যোগ দিয়ে শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন।

    গত কয়েকদিন ধরে গুঞ্জন ছিল এই দুই নেতা তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন।

    যোগদানের কিছুক্ষণের মধ্যেই শমসের মবিন চৌধুরী দলের চেয়ারপারসন ও তৈমুর আলম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ ছাড়া বিএনপির আরেক সাবেক নেতা, দলের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা দলের নির্বাহী চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। কাউন্সিলে তৃণমূল বিএনপির ২৭ সদস্যের আংশিক জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়।

    শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন এবং ২০১৮ সালে বিকল্পধারায় যোগ দেন। শুরুতে সক্রিয় থাকলেও কিছুদিন তাকে দলের কর্মকাণ্ডে দেখা যায়নি। অপরদিকে তৈমুর আলম খন্দকার বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন।

    ২০২২ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তাকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে বহিষ্কার করা হয়। পরে নিজের ভুল স্বীকার করে দলে ফেরার লিখিত আবেদন করেন তিনি। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

    পরিষদে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম, সেই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য আজও অর্জিত হয়নি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও দুর্নীতি মানুষকে ক্ষুধার্ত করে তুলেছে।

    আমি দল পরিবর্তন করলেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি বদলাবে না।

    তৃণমূল বিএনপিতে যোগদানের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তৃণমূল শব্দটি খুব পছন্দ করি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের অবজ্ঞার জবাবে তৃণমূল কংগ্রেস গঠনে সফল হন। তৃণমূল বিএনপি একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল। এটা জনগণের দল, ওয়ান-ইলেভেনের মতো রাজার দল নয়।’

    কাউন্সিল শেষে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস পেলে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনে যাব। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিধান নেই। তাই আমরা এই দাবি তুলব না। তিনি বলেন, “দলটি সবেমাত্র সংগঠিত হয়েছে। অনেক সম্মানিত ও জনপ্রিয় নেতা এই দলে যোগ দেবেন।

    কাউন্সিলে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করার পর আমি দেড় বছর অপেক্ষা করেছি। তৃণমূল বিএনপির কাউকে এভাবে অবহেলা করা হবে না। এই দল জনগণের রাজনীতি করবে। কোনো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থাকবে না।

    এর আগে অন্তরা সেলিমা হুদা মিলনায়তনের বাইরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কাউন্সিলের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ২০১৫ সালে তৃণমূল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুর পর, অন্তরা হুদা ১৬ মে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন।

    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে অন্তরা হুদা বলেন, “আমি আমার বাবার কমরেড শমসের মবিন চৌধুরী এবং তৈমুর আলমকে তৃণমূল বিএনপিতে স্বাগত জানাই। তাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আমাদের দলকে আরও শক্তিশালী করবে। আমার বাবা নাজমুল হুদা একজন জননেতা ও কর্মী ছিলেন। বিএনপি সরকারের একজন কেবিনেট মন্ত্রী, জনকল্যাণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখার কারণে তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।’

    কাউন্সিলে যোগ দিয়েছেন সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাসিন্দা হোসেন আহমেদ। পেশায় স্কুল শিক্ষক। তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে শমসের মবিন চৌধুরী বীর বিক্রম খেতাব পেয়েছিলেন। বিদেশের মাটিতে দেশের জন্য কাজ করেছেন। তার আহ্বানে আমরা সম্মেলন সফল করতে এসেছি।

    কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, গণআজাদী লীগের আতাউল্লাহ খান প্রমুখ।

    তৃণমূল বিএনপির নতুন কমিটিতে কে এম জাহাঙ্গীর মজুমদারকে কো-চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাবিবুর রহমান, মোখলেছুর রহমান ফরহাদী, দীপক কুমার পালিত, মেনোয়াল সরকার, সালাম মাহমুদ ভাইস চেয়ারম্যান, আক্কাস আলী খান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, রেজাউল করিম, মাসুদুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। ফয়েজ চৌধুরী, তালুকদার মো. যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জহিরুল হক, রোকসানা আমিন সুরমা।