বিদেশি টাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কার্যক্রম চালাচ্ছে আরসা।গ্রেপ্তার নেতার বরাতে র্যাব
মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প চালাতে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ পায়। এ অর্থে সদস্যরা মিয়ানমারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়- এমন তথ্য দিয়েছেন র্যাবের হাতে গ্রেফতার আরএসএর অন্যতম শীর্ষ নেতা মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস। র্যাব-১৫ এর কক্সবাজার কোম্পানি কমান্ডার মেজর জামিলুল হক এ তথ্য জানান।
মেজর জামিল বলেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজারে হত্যা, লাশ গুম, অপহরণ, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ বেড়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আরসা শিবিরগুলোকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। দলটির অনেককে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার করা হলেও নির্মূল করা হয়নি।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তাজনিমার খোলা এলাকা থেকে আরসার অর্থ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে ছয়টি গুলিসহ একটি বিদেশি রিভলবার জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, মিয়ানমারে থাকাকালীন ইউনুস ২০১৬ সালে মৌলভী আরিফুল্লাহর মাধ্যমে আরসায় যোগ দেন। ২০১৭ সালে তিনি অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং শরণার্থী হিসেবে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৯-এ অবস্থান করেন। ইউনূস রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আরসার অর্থ সম্পাদক। সংগঠনের প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী, ওস্তাদ খালেদ, সামিউদ্দিনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।
আরসার অর্থের উৎস জানতে চাইলে ইউনুস র্যাবকে জানান, তিনি প্রতি মাসে সৌদি আরব থেকে আবুল বাশার ৫০ লাখ, মৌলভী ইসমাইল ৫০ লাখ, মো. ইসলাম ১ লাখ, পারভেজ ১৫ হাজার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জহুর আলম ১ লাখ, মালয়েশিয়া থেকে হারুন ১ লাখ, থাইল্যান্ড থেকে হারুন ৬৫ হাজার। এর বাইরে অস্ট্রেলিয়া থেকে অজ্ঞাত রোহিঙ্গারা টাকা পাঠায়। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে ১০-১৫ লাখ টাকা আসে আরসার ক্যাম্পের জিম্মাদারদের কাছে। এই টাকা দিয়ে তিনি অস্ত্র কিনে দলের সদস্যদের বেতন ও আর্থিক সহায়তা দিতেন। এছাড়া মায়ানমারের আরাকানে রোহিঙ্গা গ্রাম থেকেও চাঁদা সংগ্রহ করা হয়।
ইউনূসের বরাত দিয়ে র্যাব কমান্ডার মেজর জামিল বলেন, গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে আরসা সমর্থিত বিভিন্ন গ্রুপ, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রায় ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৬৯৫ টাকা নিয়েছেন ইউনূস। এই গ্রুপ ২০০-২৫০ সদস্য আছে. তাদের কাছে বিভিন্ন অস্ত্র রয়েছে। এই অংশটি সংগঠনের অন্যতম সদস্য সামিউদ্দিন (ক্যাম্প-৬) এবং হোসেন (ক্যাম্প-১৭) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।