• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    রামপাল, পায়রা ও বাঁশখালীর জন্য  কয়লা আসছে

    দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি হলেও গরম বাড়লে লোডশেডিং হয়ে যায় অপরিমেয়। কারণ, ডলার ও জ্বালানি সংকট। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট জ্বালানি আমদানি ব্যাহত করছে। আশা করছি, আবহাওয়া কমে গেছে। কয়লা নিয়ে বেশ কিছু জাহাজ বাংলাদেশে আসছে। এসব খবরে বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের উদ্বেগও কিছুটা কমেছে।

    শুক্রবার রাতে ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল প্ল্যান্টের জন্য ২৬ হাজার টন কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ মংলা বন্দরে আসে। পায়রা, রামপাল ও অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লাবাহী আরও কয়েকটি জাহাজ আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশে আসবে বলে জানা গেছে।

    গ্রীষ্মের নজিরবিহীন গরমে চলতি মাসের শুরু থেকে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। উল্টো জ্বালানির অভাবে গড়ে উৎপাদন হয়েছে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। এদিকে কয়লা সংকটের কারণে গত ৫ মে পটুয়াখালীর ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্ট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কয়লার ঘাটতির কারণে ধারণক্ষমতা ৬১৭ মেগাওয়াট হলেও বাগেরহাটের রামপাল প্লান্ট থেকে গড়ে ৩৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কয়লা সংকটের কারণে পরীক্ষাধীন অবস্থায় থাকা এস আলমের বাশখালী প্ল্যান্ট বৃহস্পতিবার রাতে বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রটি ৪ মে থেকে জাতীয় গ্রিডে ৩০০ থেকে ৩৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছিল। এর ফলে বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। গভীর রাতেও লোডশেডিং ছিল।

    পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার চালু হওয়া প্ল্যান্ট থেকে ১৫০০ মেগাওয়াট উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা কমে গেছে। লোডশেডিংও কমেছে।

    বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা এখন ২৩ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট। কয়লাভিত্তিক প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা ৩ হাজার ৩৬০ মেগাওয়াট। বড়পুকুরিয়ায় এই ৫২৫ মেগাওয়াট প্ল্যান্টের মধ্যে দেশি কয়লা ব্যবহার করা হয়। বাকিটা যায় আমদানি করা কয়লায়।

    গতকাল ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল কয়লা খালাস শুরু হয়েছে। মাদার ভেসেল থেকে লাইটার জাহাজে করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে কয়লা যাচ্ছে। খুলনার স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগী শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকসের সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, জাহাজটি ২১ মে ইন্দোনেশিয়া ছেড়ে যায়। ১৯ দিন পর শুক্রবার রাতে জাহাজটি মংলা বন্দরে পৌঁছে। এর আগে গত ১৬ মে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি বসুন্ধরা ইমপ্রেসে ৩০ হাজার টন কয়লা এবং এমভি বসুন্ধরা ম্যাজেস্টি জাহাজে ৩০ হাজার ৫০০ টন কয়লা ২৯ মে মংলা বন্দরে আসে।

    পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্ট ২৬-২৭জুন পুনরায় উৎপাদন শুরু করতে পারে। কেন্দ্রের জন্য কয়লা বহনকারী তিন-চারটি জাহাজ চলতি মাসে ইন্দোনেশিয়া থেকে আসার কথা। ৩৭ হাজার টন কয়লা নিয়ে প্রথম জাহাজটি দুই দিনের মধ্যে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবে। জাহাজটি ২৩-২৪ জুন পেয়ারা জেটিতে নোঙর করবে। এই প্ল্যান্টে প্রতিমাসে অন্তত তিন লাখ টন কয়লার প্রয়োজন হয়।

    বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিক বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএম খুরশেদুল আলম বলেন, তারা আশা করছেন ২৬-২৭ জুনের মধ্যে আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।

    লোডশেডিংয়ের কারণে সরকারের অনুরোধে বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্র পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। তারা মজুত কয়লা দিয়ে উৎপাদন চালায়। এখন আবার কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। আগামী ২০শে জুন দেশে আসার কথা।