• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    লক্ষ্মীপুরে। লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশসহ ১৫ জন আহত, ১২ জন আটক

    লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সঙ্গে পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার রাতে চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

    ঘটনার পর থেকে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

    ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিফান খলিফা, ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ হোসেন জয় ও এম সজীবসহ অন্তত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।

    চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মান ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

    আহতরা হলেন- গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসআই জাকির হোসেন, চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই আব্দুর রহিম ও কনস্টেবল মোজাম্মেল হোসেন এবং ছাত্রলীগ কর্মী আকবর হোসেন, আবদুর রহমান, হাসান, রাজু ও রাজীবসহ অন্তত ১৫ জন। এদিকে আকবর হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জেলার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিকে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে সদর হাসপাতালে ছুটে যান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি)। মাহফুজ্জামান আশরাফ।

    জানা যায়, গত ইউপি নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে চেয়ারম্যান পদে ভোট দিলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিথানকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

    থানা আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে ইউনিয়নের ২টি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কমিটি দিয়েছেন। মঙ্গলবার চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কাশের চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির পক্ষ থেকে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটিকে তাদের নিজস্ব ফেইসবুক পেজে কোন প্রকার আগাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই একটি চিঠি প্রকাশ করেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক বহিষ্কৃত সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকেও সদস্য করা হয়েছে। ফলে ওড়ায় তাদের অনুসারীদের বিক্ষোভ মিছিল করেন আগের কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিথন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মান। বুধবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় উভয় পক্ষ আবারও তাদের অনুসারীদের নিয়ে মিছিল বের করে।

    স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের নেতৃত্বে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সমর্থকরা দুই থেকে আড়াই শ’ অনুসারী নিয়ে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আনন্দ মিছিল বের করে। একই সময়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মানের নেতৃত্বে দুই থেকে তিন শতাধিক কর্মী-সমর্থক নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলও করেন তারা।

    সমাবেশ শেষে চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের সমর্থকরা আফজাল রোড মোড়ে জড়ো হয়ে বক্তব্য দেন। এ সময় চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মন্দ্রুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আগের কমিটির অনুসারীরা বাহিনীতে যোগ দিয়ে আফজাল রোড মোড় দিয়ে বাজারের দিকে আসতে চাইলে তাদের মধ্যে ইট-পাটকেল বিনিময় হয়। দুই পক্ষের. এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে উভয়পক্ষের ৫ সদস্য আহত হয়।

    সংঘর্ষে জড়িতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ফলে শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘর্ষ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

    চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযানে অন্তত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

    মন্তব্য করুন