জাতীয়

আমরা জানি বিএনপির ক্ষমতা কতটুকু: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ডাঃ হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না, শুধু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, আমরা জানি বিএনপির কতটা ক্ষমতা আছে। আমরা কাউকে রাজনীতির নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দিতে পারি না। সারাদেশে পদযাত্রার উদ্দেশ্য অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা।

শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘২০১৩-১৪ ও ২০১৫ সালে যারা অগ্নিসংযোগ করেছে এবং দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিল তাদের গ্রামগঞ্জে ফিরিয়ে এনে অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে সারাদেশে পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ঈদের পর, গ্রীষ্মের পর শীত, আম পাকলে বা বার্ষিক পরীক্ষার পর আন্দোলন করতে তাদের ১৪ বছর হয়ে গেছে।’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির কাজ দিনে পদযাত্রা আর রাতে দূতাবাস যাত্রা। রাতে তারা বিভিন্ন দূতাবাসে গিয়ে কূটনীতিকদের হাত-পা ধরে রাখে, এটাই তাদের কাজ। কোনো কূটনীতিক এদেশে কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারেনি এবং পারবেও না। এদেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণের রায়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে আবারও সরকার গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বুঝতে পেরেছে আগামী নির্বাচনে তাদের কোনো সুযোগ নেই, তাই তাদের নির্বাচনকে ভয় পাচ্ছে। একটু বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায় বিএনপির সম্ভাবনা। ২০০২ সালে, সারা বিশ্ব দ্বারা স্বীকৃত একটি ভাল নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ২৯১ট আসনে জয়লাভ করে এবং উপনির্বাচনে ২টি আসন বেড়ে ৩১-এ দাঁড়ায়। ২০১৪ সালে নির্বাচনে পরাজয় জেনে তিনি নির্বাচন থেকে পালিয়ে যান। ২০১৮ সালে, বিএনপি সাতটি আসনে জয়ের জন্য ডান-বাম, অতি-ডান-দূর-বাম এবং তালেবানদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন সবাই ঐক্যবদ্ধ, কখনো বলে ৩২ দল, কখনো ১২ দল, আবার কখনো বলে ২২ দল। আবার বলুন ৫৪টি দল। আসলে বিএনপি জোটে কত দল তা বলা মুশকিল। ঢাকা শহরের এক জায়গায় যখন ২২টি দল এবং ১২টি দল জড়ো হয়, তখন সেখানে ৫০ জনকে পাওয়া যায়। আর একশ সাংবাদিক রয়েছেন। এটা তাদের সমাবেশ।

নির্বাচনের ভয়ের আরেকটি কারণ হিসেবে বিএনপি ফখরুলকে নেতা করতে চায় না বলে মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ভোট দিতে পারবেন না। তাই তারা নির্বাচনে মির্জা ফখরুলকে নেতা বানাতে চায় না। তারা মির্জা ফখরুল বা অন্য কারো হাতে বিএনপির পতাকা তুলে দিতে চান না। যে কারণে তাদের নির্বাচন ভয় পাচ্ছে। বিএনপি অতীতে যেভাবে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল এখনো সেভাবেই চলছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি রাজপথের দল এবং রাজপথ থেকে গড়া নেতৃত্ব। আমরা জীবন হাতে নিয়ে রাজনীতির পথে নেমেছি, আমরা ক্ষমতা পাওয়ার জন্য রাজনীতি করি না, ক্ষমতায় থাকার জন্য রাজনীতি করি না, রাজনীতি করি জনগণের জন্য। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক সব সময় রাজপথে থাকবে। এজন্য তাদের মাথা খারাপ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “তাদের ধরতে মাঝে মাঝে পুলিশি অভিযান চালানো হয়। প্রয়োজনে হুকুমদাতাদেরও ধরতে হবে। বাংলাদেশে আবারও নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে বিএনপি জামায়াত ও তার সহযোগীরা।

ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামীমের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুস গণি চৌধুরী, উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম রাশেদুল ইসলাম, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপু, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাসন্তী প্রভা পালিত প্রমুখ।

মন্তব্য করুন