মধ্যে পৌষেই হাড় কাঁপানো শীত।তেতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি
পৌষ ব্যাখ্যা করছে যে ‘প্রভাত বলতে পারে দিন কেমন যাবে’ কথাটি সবসময় সঠিক নয়। এ মাসের প্রথম দিন, শীত মৌসুমের প্রথম দিন, হিমেল হাওয়া ছিল সোনারোদের দখলে। গ্রামাঞ্চলে কিছুটা অনুভূত হলেও রাজধানীতে শীতের আমেজ নেই। অবশ্য পৌষ নিয়ে কোনো প্রবাদ বা প্রবাদ না থাকলেও ভাটি বাংলার গ্রামে গ্রামে তার সঙ্গীকে বলা হয় ‘মাঘের মাঝে হারকাপানো শীতের নাম’ বা ‘মাঘের শীতে বাঘ কাপে’। কিন্তু এবার মাঘের শীত আপন মহিমায় হাজির। পরিষ্কার করে বলা যায়, গত দুদিন ধরে শীতে কাঁপছে গোটা দেশ।
গতকাল শুক্রবার পৌষের ষোল তারিখে অধিকাংশ সময় আকাশ কুয়াশায় ঢেকে থাকায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন সুয়ি মা। রাজধানী ছাড়াও দেশের বড় শহরগুলোতে শীত বাড়ছে। চার জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। ঘরে তাপমাত্রাও ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৭। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, গতকাল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, বগুড়া, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বগুড়া ও যশোরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁর বদলগাছী, দিনাজপুর, নীলফামারীর সৈয়দপুর, ডিমলা, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড, কুমিলগা, ফেনী, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও ভোলার মধ্যে তাপমাত্রা ১ মিনিট থেকে ১ মিনিট। ডিগ্রী সেলসিয়াস।
বিস্তীর্ণ এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে, এটি একটি তীব্র ঠান্ডা ফ্রন্ট হিসাবে বিবেচিত হয়। ৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা মাঝারি এবং ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এটি হালকা। ঢাকা শহরে গত কয়েকদিন থেকে বিকেলের দিকে শীত বেড়েছে। গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশা ছিল। হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চালাতে হবে। কুয়াশা বাড়ায় সকাল থেকেই ঢাকার বাতাসের মান ছিল খুবই খারাপ। বিশ্বের বাতাসের মান পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজুয়ালের মতে, গতকাল রাজধানীর বাতাস ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। এজেন্সি লোকেদের এই ধরনের বাতাসে ফেস মাস্ক বা মাস্ক পরে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছে, জানালা বন্ধ রাখতে হবে এবং শিশু এবং বয়স্কদের এই ধরনের বাতাসের সংস্পর্শে আসা উচিত নয়। দিনের বায়ু দূষণের দিক থেকে বিশ্বের প্রধান শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা ছিল প্রথম থেকে দ্বিতীয়।
শুধু ঢাকা নয়, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি জেলায় শীত অনুভূত হচ্ছে। তবে উত্তরাঞ্চলের জনপদগুলোতে এর তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। কয়েকদিন ধরেই রাতে বৃষ্টির মতো শিশির পড়ছে। ভোর থেকেই কুয়াশায় ঘেরা। দৃশ্যমানতা মারাত্মকভাবে হ্রাস পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু সেতুর উত্তরে যান চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে; যেমনটা ঘটছে ফেরিতে। রাতে কুয়াশার সাথে হিমশীতল বাতাস শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। এতে শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। শিশু এবং বৃদ্ধদের ঠান্ডা রোগের সাথে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক আরও বলেন, ‘দুই দিনের টানা বর্ষণের পর মেঘলা আবহাওয়া চলে গেছে এবং ঠান্ডা ও কুয়াশার তীব্রতা বেড়েছে। এ ধরনের শীত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে সপ্তাহের শুরুতে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।