জাতীয়

কম দামের ভোজ্য তেল কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না

রোববার থেকে কমবে ভোজ্যতেলের দাম। রাজধানীর কয়েকটি বাজারে নতুন দামে সয়াবিন বিক্রির লক্ষণ দেখা যায়নি। ক্রেতাদের আগের দামেই কিনতে হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৬৭ টাকা ও পাম অয়েল ১১৭ টাকায় বিক্রির নতুন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। তেলের দাম কমানো হয়েছে তা তারা জানেন না বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। কোম্পানির কোনো প্রতিনিধি দাম কমানোর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। আগের বেশি দামে কোম্পানিগুলো থেকে তেল পাচ্ছেন তারা। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও মহাখালী কাঁচামালের বাজারে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।

বেশ কিছু খুচরা বিক্রেতার সাথে কথা বলে, কোম্পানির প্রতিনিধিরা সাধারণত দাম বৃদ্ধির ঘোষণার অন্তত এক সপ্তাহ আগে দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। পরে দেখা গেল তাদের দেওয়া ইঙ্গিতই সঠিক। তবে কত দাম কমানো হচ্ছে বা করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো কোম্পানি কিছু জানায়নি। আগের বেশি দামেই তেল দিচ্ছে কোম্পানিগুলো। যে পরিমাণ তেল দেওয়া হয়েছে তা আগামী সপ্তাহেও বিক্রি করা যাবে না।

মহাখালী কাঁচাবাজারের মাসুমা দোকানের বিক্রয়কর্মী আল-আমিন বলেন, দাম কমেছে বলে শুনিনি। কোম্পানির প্রতিনিধিরা দাম বাড়ার আগে জানিয়ে দিতেন এবারও কিছু বলেনি। কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ তেল দিয়েছে তা আগামী সাত-আট দিনেও বিক্রি করা যাবে না।’

কারওয়ান বাজারে শাহ পরান স্টোরের মালিক মো. মামুন বলেন, ‘তেলের দাম কখন কমেছে, কতটা কমেছে জানি না। দাম কমানোর বিষয়ে কোম্পানির ডিলাররা কিছু বলেননি। আমরা আগের দামেই তেল পাচ্ছি।’ বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে সরকার প্রতি মাসে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ ডিসেম্বর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমদানি, মজুদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম পর্যালোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সয়াবিন তেলের দাম ১ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। লিটারে ৫ টাকা এবং পাম অয়েল ৫ টাকা। প্রতি লিটারে ৪ টাকা। এরপর ১৫ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে দাম কমানোর ঘোষণা দেয়।

এর আগে গত ১৭ নভেম্বর বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।

বর্ধিত মূল্য ১৮ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়েছে।

রাহেলা বেগম কারওয়ান বাজার থেকে পাঁচ লিটারের বোতল তেল কিনেছেন। বেগুনবাড়ি এলাকার এই বাসিন্দা জানান, দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। কমলে এক সপ্তাহেও তেলের নতুন দাম পাওয়া যাচ্ছে না। দাম কমানোর ঘোষণা ক্রেতাদের সঙ্গে এক ধরনের সূক্ষ্ম প্রতারণা। সরকারকে শুধু মূল্য ঘোষণা নয়, বাস্তবায়নেও ভূমিকা রাখতে হবে।

৫ শতাংশ ভ্যাটে ভোজ্যতেল আমদানির মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ : অন্যদিকে, ৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে ভোজ্যতেল আমদানির সুযোগের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

গত ১৪ ডিসেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে লেখা এক চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা কমলেও অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে আনুপাতিক হারে কমানো যাচ্ছে না। ডলার তাই আসন্ন রমজান ও ঈদুল ফিতরে ভোজ্যতেলের দাম ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

একই সঙ্গে উৎপাদন ও ব্যবসায়িক পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়। ভ্যাট অব্যাহতির আগে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো।

মন্তব্য করুন