• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    আদিতমারীতে আ’লীগের সংঘর্ষ  রামদা মহড়া

    লালমনিরহাটের আদিমারী উপজেলায় কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের ঘোষিত নতুন কমিটি ও পদচ্যুতদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

    পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে আদিমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ-সমাবেশ ডেকেছে। আদিতমারী জিএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি দলীয় কার্যালয় এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের অনুসারীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। তারা একে অপরের ওপর বৃষ্টির মতো ইট ছুড়তে থাকে।

    এ সময় উভয় পক্ষ ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অপরকে ধাওয়া দেয়। মিছিলে জেলা আওয়ামী লীগের ঘোষিত নতুন উপজেলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতীর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ বুড়িমারী-লালমনিরহাট মহাসড়কের দলীয় কার্যালয় এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় দুই পাশে হেলমেটধারীদের হাতে রামদা, বল্লম, দেশি ধারালো অস্ত্র দেখা যায়। সংঘর্ষে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করে।

    জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা করতে ব্যর্থ হলে আবারও আন্দোলন শুরু করা হবে।

    আদিতমারী থানার ওসি মোক্তারুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

    গত ২০ নভেম্বর নীলফামারীর তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে আভাসার রেস্ট হাউজে জেলা আওয়ামী লীগের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আদিমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। সাবেক বিএনপি নেতা এমনকি রাজাকারের সন্তানদের কমিটিতে রাখা হয়েছে এবং তা বাতিলের আন্দোলন শুরু করেছে বহিষ্কৃতরা। ওইদিন আদিতমারী উপজেলা বাজার এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।

    এরপর কমিটি বাতিল করে ২১ নভেম্বর নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। ভাদাই ইউপি চেয়ারম্যান শ্রীকৃষ্ণ কান্ত বিদুরকে সভাপতি ও কমলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে, যা গতকাল সংঘর্ষে রূপ নেয়।

    মন্তব্য করুন