• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    শূন্যরেখায় গোলাগুলি।তুমব্রু সীমান্তে উত্তেজনা, নিরাপত্তা জোরদার

    বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ৫২ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তুমব্রু সীমান্তে এক ডিজিএফআই কর্মকর্তা নিহত ও এক র‌্যাব সদস্য আহত হওয়ার পর সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মানুষের চলাচলেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

    গত সোমবার তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় র‌্যাব ও ডিজিএফআই-এর যৌথ মাদকবিরোধী অভিযানে চোরাকারবারি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ডিজিএফআই-এ নিযুক্ত একজন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা নিহত হন। এ ঘটনায় এক র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জানা গেছে, নিহত কর্মকর্তার নাম স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী। ১ জুন ২০১৩ , তিনি বিমান বাহিনীর জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন এবং সততা ও নিষ্ঠার সাথে তার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গত ১৬ মে থেকে ডেপুটেশনে ডিজিএফআইতে কর্মরত ছিলেন। ৫ মার্চ ২০১৯ তারিখে স্কোয়াড্রন লিডার আঞ্জুমা রুম্মানের সঙ্গে বিয়ে হয় বিমান বাহিনীর কর্মকর্তার। রুশদির বয়স ছিল ২৯ বছর ১১ মাস। তিনি ১৯৯২ সালের ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।

    এদিকে গুলিতে আহত র‌্যাব পুলিশ কনস্টেবল সোহেল বড়ুয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় অস্ত্রোপচার হয়েছে।

    নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ ফজলে এলাহী বলেন, ভোর ৫টার দিকে সোহেল বড়ুয়ার অপারেশন করি। তার মাথায় প্রচুর রক্ত জমাট ​​ছিল। অপারেশন করে অপসারণ করা হয়। সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। সে নিরাপদ, আগের চেয়ে ভালো। কথাও বলতে পারেন।

    এদিকে ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘রোহিঙ্গা মাদক ব্যবসায়ীদের’ সঙ্গে গুলির ঘটনা ঘটেছে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছিল। ঘটনাক্রমে সেখানে একজন অফিসার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। কীভাবে তাকে গুলি করা হয়েছে এবং কোন মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে গুলি করেছে- এসব বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। এই ঘটনার সত্যতা আমরা পরে প্রকাশ করব।

    নাইক্ষ্যংছড়ির কোনাপাড়া ক্যাম্পের মাঝি (টিম লিডার) দিল মোহাম্মদ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় তাদের ক্যাম্পের কাছে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় শতাধিক রাউন্ড গুলি চালানো হয়। এতে ক্যাম্পের বাসিন্দা সাজেদা বেগম নামে ২০ বছর বয়সী এক তরুণী মা গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। মাত্র সাত দিন আগে এক সন্তানের মা হয়েছেন তিনি।

    নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি তন্তু সাহা জানান, সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এর বেশি বলতে পারব না।

    ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, তিনি সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টার শেলের শব্দ শুনেছেন। গোলাগুলির তীব্রতা বাড়তে থাকলে লোকেরা যতটা সম্ভব পালিয়ে যায়।

    ডিজিএফআই কর্মকর্তার দাফন : রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, ডিজিএফআই কর্মকর্তা রিজওয়ান রুশদীকে গতকাল দুপুরে রাজবাড়ীর পানশায় দাফন করা হয়। তিনি পাংশার পাট্টা ইউনিয়নের পুইজোর এলাকার ডা. আব্দুল মতিনের ছেলে মো. পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

    বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৬৫০ হেলিকপ্টারে তার মরদেহ পাংশা সরকারি জর্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে আসে। বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।

    মন্তব্য করুন