• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    ঢাকা জেলা আ’লীগের সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের।গাধা পানি ঘোলা করে খায় বিএনপি নির্বাচনে আসবে

    ‘আদালত নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে জাদুঘরে পাঠিয়েছে, নিষিদ্ধ করেছে। তাই এ দেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে না। বিএনপি চাইলে নির্বাচনে আসবে, নির্বাচন না এলেও হবে। সেই নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসবে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ।’ শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতারা এসব কথা বলেন।

    দলের গুরুত্বপূর্ণ এই সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্মেলনে মানুষের ঢল নামে। অনেক দিন পর দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপির চলমান জনসভার প্রেক্ষাপটে আলোচিত এই সম্মেলনকে ঘিরে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করেছে ক্ষমতাসীন দল।

    সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশে বলেন, শান্তির পথে এসো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত তাড়াও। আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে জাদুঘরে পাঠিয়েছে। আদালতই এটা নিষিদ্ধ করেছে, আমরা করিনি। বিএনপি বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে আসবে না! যাবে গাধা পানি ঘোলা করে খায়। সময় হলে দেখা যাবে বিএনপি নির্বাচনে যায় কি না।

    বিএনপি থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে এদেশের অর্থনীতি, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ গ্রাস করেছে। এখন ক্ষমতায় আসতে পারলে জাতিকে গ্রাস করবে। তাই সাবধান, বিএনপি থেকে সাবধান। বৃদ্ধের বাড়ির সামনে একটা চিহ্ন- ‘কুকুর থেকে সাবধান।’ আমরা বলি- ‘বিএনপি থেকে সাবধান।’

    রংপুরে বিএনপির গণসমাবেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রংপুরে বিএনপির জনসভার তিন দিন আগে থেকেই মানুষ মঞ্চে শুয়ে আছে। বাড়ির ছাদে ঘুমানো, মাঠে ঘুমানো, রাস্তায় ঘুমানো। আর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টাকার ঝুলিতে পড়ে আছেন। সমাবেশের নামে বিদেশ থেকে টাকা আসছে, আর তারা টাকায় ঘুমাচ্ছে।

    তিনি বলেন, আমরা দেখেছি বিএনপির সমাবেশে কত লোক ছিল। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের আজকের এই সম্মেলনের লোকসংখ্যা দেখুন। ফখরুল সাহেব, দেখুন আপনার কত লোক আছে, আর আমাদের কতজন আছে। আমাদের এখানে কোনো নেতা নেই। এর পর কত মানুষ হয়েছে।

    আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আজ যারা ১০ ডিসেম্বর সরকারকে পতন ঘটাবে বলে চিৎকার করছে, তারাই ২০১৩-১৪ সালে আগুন-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করেছে। গুলশানের বাসায় বন্দি খালেদা জিয়া নিজের দুষ্টুমিতে। বিএনপি নিজেদের কবর খুঁড়ছে। তারা যে ষড়যন্ত্র করছে তাতে তাদের পতন ঠেকাতে পারবে না।

    প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি ভেবেছিল এদেশকে আবার পাকিস্তান করা হবে। বাংলা ভাই এটাকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের দেশে পরিণত করবে। আমরা বেঁচে থাকতে এটা হতে দেব না।

    যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেছেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে সারা বিশ্বে অস্থিরতা চলছে। এতদসত্ত্বেও বিশ্বের অন্যান্য দেশ যে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে, সে তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তিতে রয়েছে। তা সত্ত্বেও সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে সাময়িক এই দুর্ভোগ মোকাবেলা করতে হয়।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরের পর আওয়ামী লীগকে তাড়িয়ে দেবে বিএনপি! তারাই মন্ত্রিসভা গঠন করেছে! বিএনপি যতই লাফালাফি করুক না কেন জনগণ তাদের সাথে নেই। দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবে।

    প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেছেন, এ দেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে না। বিএনপি চাইলে নির্বাচনে আসবে, না হলেও নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে, প্রধানমন্ত্রী হবেন শেখ হাসিনা।

    আট বছর পর এই ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর ২টায় সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ঢাকার ধামরাই, সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা এবং থানা-ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা সম্মেলনস্থলে আসতে থাকেন। পুরুষরা লাল-সবুজ টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে এবং নারীরা বিভিন্ন রঙের শাড়ি পরে ঢোলের তালে মিছিলে যোগ দেয়। তাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগরের নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। প্রায় সবার হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি সম্বলিত রঙিন ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা গেছে।

    মন্তব্য করুন