খাদ্য মন্ত্রণালয়কে ৯ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন
খাদ্য মন্ত্রণালয়কে ৯ লাখ টন চাল আমদানির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে চার লাখ টন কেনা হবে। পাঁচ লাখ টন টেন্ডারের মাধ্যমে কেনা হবে। বুধবার সচিবালয়ে কমিটির বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল বারিক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চাল আমদানির দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের জন্য ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন করার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। দ্রুত চাল আমদানি নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে গতকাল সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদনের প্রস্তাব প্রত্যাহার করে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
এ দুই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণ করবে বাজার। ডলার ও অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। তবে ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদের হারের ওপর আরোপিত ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহারের কথা ভাবছে না সরকার।
মোস্তফা কামাল বলেন, অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতিতে যেভাবে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবস্থাপনা হয়, বাংলাদেশেও তাই হবে। তবে ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদের হারের ওপর আরোপিত সীমা অপসারণের কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ বাংলাদেশে সুদের হারের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এ জন্য সরকার রাজস্ব ও মুদ্রানীতির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার ভয় নেই। কারণ রপ্তানি আয় বাড়ছে। আমদানি ব্যয় কমছে। অন্যদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। এটি প্রতি মাসে গড়ে ২০০ কোটি ডলার উপার্জন করছে। ফলে ভবিষ্যতে রিজার্ভ বাড়বে এবং শিগগিরই আগের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারে যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির আলোচনা চলছে। আলোচনা চূড়ান্ত হলে বাংলাদেশি টাকা ও রাশিয়ান রুবেল ‘অদলবদল’ করে মূল্য পরিশোধের চেষ্টা করা হবে।
৯০ হাজার টন সার কেনার অনুমোদন: ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কানাডিয়ান কমার্শিয়াল কর্পোরেশন থেকে ৩৮৬ কোটি টাকায় ৫০ হাজার টন এমওপি এবং মরক্কোর ওসিপি থেকে ২৯৭ কোটি টাকায় ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। এসব সার আমদানি করবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন।
ডাল ও সয়াবিন তেল কিনছে টিসিবি : টিসিবির জন্য ১৫ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। মসুর ডাল কেনা হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ টাকায়। ঢাকার ব্লু স্কাই এন্টারপ্রাইজ, চট্টগ্রামের মাসুদ অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং রুবি ফুড প্রোডাক্টস সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৫ হাজার টন সরবরাহ করবে। একইভাবে টিসিবির জন্য ১ কোটি ৯৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদনও দিয়েছে কমিটি। এর মধ্যে ৫৫ কোটি টাকায় ৩০ লাখ লিটার সরবরাহ করবে বসুন্ধরা মাল্টিফুড প্রোডাক্টস। সিটি ভোজ্যতেল, মেঘনা ভোজ্য তেল শোধনাগার এবং সুপার অয়েল শোধনাগার দ্বারা ৫৫ লাখ লিটার সরবরাহ করা হবে। এছাড়া মেঘনা তেল শোধনাগার থেকে ৩ মিলিয়ন লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে।
জেনেক্স ইনফোসিস ভ্যাট সংগ্রহে যোগ দিচ্ছে: খুচরা বিক্রয় থেকে ভ্যাট সংগ্রহের জন্য আগামী এক বছরের মধ্যে সারা দেশে ৩ লাখ সেলস ডেটা কন্ট্রোলার মেশিন বসানো হবে। বেসরকারি সংস্থা জেনেক্স ইনফোসিস এই মেশিনগুলি স্থাপন করবে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য জেলাকে তিন ভাগে ভাগ করে এসব মেশিন বসানো হবে। এসব মেশিন থেকে সংগৃহীত ভ্যাট থেকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন পাবে কোম্পানিটি। এই কোম্পানি ঢাকা শহরে প্রতি ১০০ টাকা ভ্যাট থেকে ৫২ পয়সা, চট্টগ্রামে ৫৩ পয়সা এবং অন্যান্য এলাকা থেকে সংগৃহীত ভ্যাট থেকে ৫৪ পয়সা কমিশন পাবে। ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই দর অনুমোদন করেছে।