জাতীয়

মুক্তিযোদ্ধাদের কবর সংরক্ষণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটি।

মুক্তিযোদ্ধাদের কবর সংরক্ষণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারসহ নামফলক অপসারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটি সংসদ সচিবালয় ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ঘটনা তদন্তে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে।

রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

এদিকে, গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের গুলিস্তান কমপ্লেক্স ভবন নিয়ে সংবাদ প্রচারের জন্য বেসরকারি নাগরিক টেলিভিশন ‘একপেশে’-এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

জানা যায়, বৈঠকে লালমনিরহাট জেলায় মুক্তিযোদ্ধা সমাধি প্রকল্পের নামফলক ভেঙ্গে ও মুছে ফেলার ছবি কমিটির নজরে আসে। পরে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটির সভাপতি শাজাহান খান নিজেই।

সভায় তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবদ্দশায় নানাভাবে অবহেলিত হয়েছেন। মৃত্যুর পরেও অবহেলিত। এটা হতে দেওয়া যাবে না। পরে বৈঠক থেকে লালমনিরহারের ঘটনা তদন্তের পাশাপাশি দেশের অন্য কোথাও একই ধরনের ঘটনা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার সুপারিশ আসে।

এ বিষয়ে শাজাহান খান বলেন, সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কবর বাধাঁই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই নামফলক মুছে ফেলা হচ্ছে। কোথাও কবর ভেঙ্গে পড়ছে। কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটা চলবে না। নেমপ্লেটে উচ্চ মানের উপকরণ এবং অমার্জনীয় কালি ব্যবহার করা উচিত। ঘটনার তদন্ত করতেও বলা হয়েছে।

এদিকে সংসদ সচিবালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে লালমনিরহাটে বীরমুক্তিযোদ্ধা সমাধি প্রকল্প ধসের কারণ অনুসন্ধানে জাতীয় সংসদ সচিবালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে জেলার নামফলক অপসারণ এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।

নাগরিক টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ভবন নিয়ে অতীতে অনেক অনিয়ম হলেও তিনি কমিটির সভাপতি হওয়ার পর ঘটনার তদন্ত করে নিয়মের আওতায় এনেছেন। . ভবনের খবর দিয়েছে নাগরিক টিভি। কিন্তু তারা প্রতিবেদনে মন্ত্রণালয়, কল্যাণ ট্রাস্ট বা সংসদীয় কমিটির বক্তব্য নেয়নি।

সূত্র জানায়, বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের সংগৃহীত অর্থ দিয়ে তেজগাঁওয়ের জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুপারিশ আসে বৈঠক থেকে।

বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ সিরাজুল ইসলামকে দুর্নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করার সুপারিশ করে কমিটি।

শাজাহান খানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্যরা সভায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী এ.কে.এম. মোজাম্মেল হক, এবি তাজুল ইসলাম, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ও মোছালেম উদ্দিন আহমদ বৈঠকে অংশ নেন।

মন্তব্য করুন