খেলা

বিসিবি কৃচ্ছ সাধনের নমুনা।বিমানের টিকিটেই খরচ হচ্ছে লাখ লাখ টাকা

খরচের লাগাম টানতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর থেকেই বিদেশে খেলতে যাওয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের বহর ছোট রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে ওই সফরে বৈদেশিক মুদ্রার কিছুটা সাশ্রয় হয়েছিল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রশংসনীয় কাজ করেছে।

তবে কোটি কোটি টাকা লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যাচ্ছে সেদিকে কারো নজর নেই। বিসিবির কৃচ্ছ সাধনের নমুনা অনেকটা এরকমই। দেরিতে দল ঘোষণা এবং ঘন ঘন খেলোয়াড় পরিবর্তনের কারণে ফ্লাইট টিকিট ক্রয় ও বাতিলের কারণে বিসিবিকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় চার লাখ টাকার টিকিট কিনতে হয়েছে ১৩ লাখ টাকায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জিম্বাবুয়ে সফরের একাধিক টিকিট পরিবর্তন ও বাতিলের কারণে বিপুল পরিমাণ অর্থ নষ্ট করতে যাচ্ছে বিসিবি।

বাংলাদেশ দলের জিম্বাবুয়ে সফর অনেক আগেই নিশ্চিত হয়েছে। বিসিবি পরিকল্পনা মতো এগিয়ে গেলে এক মাস আগেই দল চূড়ান্ত করে সফর শেষ করা যেত বলে মনে করছেন বোর্ড কর্মকর্তারা। তবে খেলোয়াড়দের বিমানে ওঠার মাত্র চার দিন আগে জিম্বাবুয়ে সফরের দল ঘোষণা করা হয়। কিছু ক্রিকেটার বাদ পড়ায় ক্ষতিপূরণ দিয়ে টিকিট বাতিল করতে হয়েছে। শেষ মুহূর্তে একাধিক টিকিট কিনতে দুই থেকে তিনগুণ টাকা খরচ হয়। সবচেয়ে বড় কথা, গতকাল পর্যন্ত ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফদের কারও ভিসা ছিল না। নির্ধারিত সময়ে যেতে চাইলে কয়েক দিনের মধ্যে জিম্বাবুয়ে থেকে ভিসা নিতে হবে।

বিসিবির ক্রিকেট ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চড়া দামে টিকিট কেনার কারণ চিহ্নিত করে সমাধান করা হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলের সদস্যদের খুব একটা পরিবর্তন করা হয়নি। জিম্বাবুয়ে সফরের স্কোয়াড আগেই ঠিক করা হয়েছিল; একজনকে পরে নেওয়া হয়েছিল। কোচিং স্টাফদেরও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রুট বদলানো যাবে না। আমরা সাশ্রয়ী হওয়ার চেষ্টা করছি।’

তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ, এনামুল হক বিজয়, এবাদত হোসেনের টিকিট ওয়েস্ট ইন্ডিজে ক্ষতিপূরণ দিয়ে বদলাতে হয়েছে। ইনজুরির কারণে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের টিকিট বাতিল হওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ইয়াসির আলি রাবির ফেরা বিসিবির কোষাগার থেকে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। একইভাবে জিম্বাবুয়ে সফরের প্রাথমিক ওয়ানডে দলে মুশফিকুর রহিমকে টি-টোয়েন্টি এবং পেসার এবাদত হোসেনকে রাখা হয়েছে। দল ঘোষণার বিলম্বের কারণে একজনকে টিকিট পরিবর্তন করতে হয়েছিল এবং অন্যটিকে বাতিল করতে হয়েছিল। পারভেজ হোসেন ইমনের টিকিট আবার বুক করতে হয়েছে। ফলে তিনগুণ বেশি দামে আমাকে চার লাখ টাকার টিকিট কিনতে হয়েছে; ভিসা সংক্রান্ত জটিলতাও রয়েছে। কারণ ভিসার ব্যবস্থা করছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির কথা মাথায় রেখে এক মাস আগেই দল নির্বাচনের কাজ করা যেতে পারে। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা, ‘এ’ দলের ক্ষেত্রে খেলোয়াড় নিতে দেরি কেন? যদিও ‘এ’ দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ২৯শে জুলাই ঠিক করা হয়েছে, তবে সাতজন এখনও ইংল্যান্ডের ট্রানজিট ভিসা পাননি। এক্ষেত্রেও খেলোয়াড়দের তাদের টিকিট পরিবর্তন করতে হতে পারে, যা বিসিবির জন্য বিশাল আর্থিক ক্ষতির কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। সত্যিই, বিসিবি এ ব্যাপারে আরেকটু সচেতন হলে অনেক টাকা সাশ্রয় হতো।

মন্তব্য করুন