ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে।বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কর্মস্থলে ফিরতে এক্সপ্রেসওয়েতে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা কয়েকদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাকচর যাত্রী ছাউনি রোববার সকাল থেকেই ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। একই অবস্থা শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা সেতুর পাশে। এক্সপ্রেসওয়ের এই রুটে চলাচলকারী কোনো বাসেই সিট খালি ছিল না। হঠাৎ কোনো বাস এলে যাত্রীরা তাতে ওঠার জন্য ছুটে যান। তীব্র গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে যানবাহন না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। আর যাঁরা বাস বা অন্য কোনও যানবাহনে উঠতে পেরেছেন, তাঁদেরও দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা ভাড়া ৩০০ থেকে ৪০০টাকা দিতে হয়।
পাকচর যাত্রী চাউনি ও নাওডোবা ব্রিজের কাছে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সিরিয়াল ধরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। তারা ‘সিরিয়াল ম্যান’ নামে পরিচিত। তারা একসঙ্গে আট থেকে দশজন যাত্রীকে বাসে তুলে দেয়। এ জন্য তারা বাসের কন্ডাক্টরের কাছ থেকে টাকা নেয়। এই কাজ বৈধ না হলেও যাত্রীরা ‘সিরিয়াল মেনদের’ কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে।
রোববার ঢাকার গুলিস্তান, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ীর যানবাহনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে যাত্রীদের। বাস না পেয়ে ছোট মিনি ট্রাক ভাড়া করে অনেকেই ঢাকায় ফিরেছেন।
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আবু তালেব মোল্লা জানান, সদরপুর, শিবচর ও ভাঙ্গা উপজেলার কিছু এলাকা থেকে যাত্রীরা পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য পাকচর যাত্রী ক্যাম্প থেকে বাসে ওঠেন। রবিবার সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অনেকক্ষন ধরে এখানে অপেক্ষা করছিলাম। পরে ২০০ টাকা এবং ৩০০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাসে উঠলাম।
শিবচরের নীলখী ইউনিয়নের চর কামারকান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী মো. রফিক বলেন, ভাড়া বৃদ্ধির এমন নৈরাজ্য দেখেও প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ভাঙ্গা উপজেলার চাকিঘাটা গ্রামের আলিমুজ্জামান বলেন, প্রতিবাদ করতে গেলে অপমানিত হতে হয়।
জাজিরা উপজেলার সেনেরচর গ্রামের তাহমিনা আক্তার জানান, নাওডোবা এলাকায় কোনো যাত্রী ছাউনি নেই। পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকাগামী যাত্রীদের জন্য এখানে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা খুবই প্রয়োজন।
ইলিশ পরিবহনের বাসচালক শহিদুল ইসলাম জানান, ঢাকায় যেতে পদ্মা সেতুসহ তিনটি স্থানে টোল দিতে হয়। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের দাম চড়া। তাই ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে।
শিবচর হাইওয়ে থানার ওসি গাজী সাখাওয়াত হোসেন জানান, কিছু অসাধু সিরিয়াল পাকচর যাত্রী ছাউনিতে যাত্রী ওঠানোর জন্য আনফিট গাড়ি নিয়ে আসছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। আমি বাস মালিক সমিতিকে জানিয়েছি। সমিতি ব্যবস্থা না নিলে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।