• বাংলা
  • English
  • শিক্ষা

    ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে আর কোনো লিখিত পরীক্ষা নেই

    ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির আর লিখিত পরীক্ষা নয়, আজ থেকে শুরু হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বা মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি। নতুন এই মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে না, শ্রেণিকক্ষে তাদের আচরণসহ বিভিন্ন বিষয়ের মাধ্যমে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। সরকারি-বেসরকারি সব স্কুলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সরঞ্জাম এবং নির্দেশাবলী অনুসরণ করে মূল্যায়ন করা উচিত। এই মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

    সূত্রের খবর, ষষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন পাঠ্যক্রমে লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি ছিল। কিছু স্কুল শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয় যে লিখিত পরীক্ষা হবে। তবে অবশেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে বলেছে, নতুন পাঠ্যসূচিতে এ দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোনো লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। মূল্যায়নের সরঞ্জাম এবং নির্দেশাবলী অনুসারে মূল্যায়ন শেষ করার পরে শিক্ষার্থীদের ফলাফল দেওয়া হবে। সূত্র আরো জানায়, বিষয়টি সকল শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের অবহিত করা হয়েছে।

    এ বিষয়ে আলাপকালে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের কোনো গতানুগতিক পদ্ধতি নেই। লিখিত পরীক্ষা হবে না। যাইহোক, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সরঞ্জাম এবং নির্দেশাবলী অনুসরণ করে মূল্যায়ন করা উচিত। শ্রেণীকক্ষের আচরণ, হোমওয়ার্ক বা গ্রুপ স্টাডি প্রকল্পের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। তিনটি মার্কের ‘ত্রিভুজ’, ‘বৃত্ত’ এবং ‘বর্গ’-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। ‘ত্রিভুজ’ ভাল নির্দেশ করে, ‘বৃত্ত’ গড় নির্দেশ করে এবং ‘বর্গ’ খারাপ ফলাফল নির্দেশ করে। যে শিক্ষার্থী তিনটি বিষয়ে ‘ক্লাস’ পাবে তাকে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে না।

    প্রতিটি শিক্ষকের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড সহ অ্যাপস প্রদান করা হয়। সেখানে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। ক্লাস শেষে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তার পরিচয়পত্র লিখবেন এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে উপরের তিনটি নম্বরের যে কোনো একটি দেবেন। শিক্ষক দ্বারা প্রদত্ত এই চিহ্নগুলি জাতীয় সার্ভারে যোগ করা হবে।

    তিনি বলেন, গতানুগতিক পরীক্ষা ছিল শিক্ষার্থীদের স্মৃতির মূল্যায়ন মাত্র। তবে, নতুন পাঠ্যক্রম শিক্ষার্থীর সামগ্রিক দক্ষতা, অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতার মূল্যায়ন করবে। পরীক্ষার চেয়ে এই মূল্যায়ন বেশি গ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, বিষয়টি নতুন হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বুঝতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

    নতুন কারিকুলামে এখন ষষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির মূল্যায়নের কোনো লিখিত পরীক্ষা নেই। আগামী বছর থেকে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতেও একই ব্যবস্থা চালু হবে। প্রাথমিকের বিভিন্ন পর্যায়েও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। সব কাজ শেষ হলে একজন শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য ইউনিক আইডিতে স্থানান্তর করা হবে। সূত্র আরও জানায়, ওই শিক্ষার্থী প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত যে ক্লাসে পড়েছিল তা এই ইউনিক আইডির মাধ্যমে আজীবন সংরক্ষণ করা হবে।