খেলা

১৪০ কোটির স্বপ্ন ভেঙে দিল ১১ জন

বিশ্বকাপে টানা ১০ ম্যাচ জিতেছে। ভারত এক ধরনের আকাশে উড়ছিল। ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ আবারও দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় ১১ জন অস্ট্রেলিয়ার কাছে। তাদের বিজয়  ভারত জুড়ে উৎসবের মেজাজকে ম্লান করে ফাইনালের গ্র্যান্ড স্টেজে উড়ে যায়। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দলটি ৭ উইকেটের জয়ে তাদের ষষ্ঠ শিরোপা জিতেছে। এটাই অস্ট্রেলিয়া, বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাকে মনে হচ্ছিলো বাজে। টানা ৯ জয়ে সেই দলই এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।

গ্যালারির নীল তরঙ্গ দিনের আলোয় আলোকিত করে দিল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম। এবং রাতে, পুরো আহমেদাবাদের আকাশ পটকা দিয়ে আলোকিত হয়। কিন্তু এগুলো ভারতীয় ক্রিকেটারদের জন্য গভীর অন্ধকারের মতো। ম্যাচ শেষে রোহিত-কোহলি মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়লেও খুশি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা।

টসে জিতে স্বাগতিক ভারতকে ব্যাট করতে আমন্ত্রণ জানান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। আর প্রথমে ব্যাট করে আগের দশ ম্যাচের মতোই উড়তে শুরু করে ভারত। শুভমান গিলকে দর্শক বানিয়ে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের আক্রমণ করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তাই প্যাট কামিন্সের সিদ্ধান্তকে শুরুতেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। তবে পাল্টা আক্রমণ করতে সময় নেয়নি অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে প্রথম ধাক্কাটা নেয় ভারত। মিচেল স্টার্কের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে ব্যাট ঠিক জায়গায় রাখতে পারেননি শুভমান গিল। ৭ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ের পরও রোহিত শর্মা রান রেট ধরে রেখেছেন।

কোহলির সাথে ৬৭ রানের স্ট্যান্ড ভাঙার পরেও, রাহুল ধীর গতির নীতি গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু মিচেল স্টার্কের দুর্দান্ত বল থেকে টিকতে পারেননি তিনি। রাহুল ১০৭ বলে ৬৬ রান করেন। তার বিদায়ের পর সব আশা সূর্যকুমার যাদবকে ঘিরে। কিন্তু ধীরগতির বলে তাকেও বিপাকে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। আলো না ছড়াতেই ড্রেসিংরুমে ফিরে যান সূর্য। ২৮ বলে ১৮ রান করে হ্যাজেলউডের শিকার হন তিনি। এরপর শেষ উইকেট জুটিতে যোগ হয় আরও ১৪ রান।

২৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটাও ছিল ঝড়ো। জাসপ্রিত বুমরাহের প্রথম ওভারে ট্র্যাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার ১৬ রান দেন। কিন্তু পরের ওভারে বল করতে এলে ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ধাক্কা দেন মোহাম্মদ শামি। এবারের বিশ্বকাপে বল হাতে আগুন ঢালছেন ভারতের এই পেসার। ধাক্কা সামলাতে না পেরে চোট পান জসপ্রিত বুমরাহ। তার শিকার মিচেল মার্শ। দলের ৪১ রানের মাথায় বুমরাহের সামান্য লাফানো বল কাটতে চেয়েছিলেন মার্শ। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে চলে যায় রাহুলের কাছে। ১৫ বলে ১৫ রান করে ফেরেন মার্শ। তার পরের ওভারে আবারও আঘাত হানেন বুমরাহ। এবার তার শিকার হলেন স্টিভেন স্মিথ। ৪ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেরেন মিডল অর্ডার। ৪৭ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কাঁপছে অস্ট্রেলিয়া। গ্যালারিতে ১৩০,০০০ দর্শকের গর্জনে অসি ব্যাটারদের পা কাঁপছিল। কিন্তু ট্র্যাভিস হেড এবং মারনাস লাবুসাঞ্জ সে সব প্রতিহত করেন। কে জানত এই দুজন ম্যাচ শেষ করবে।

ম্যাক্সওয়েল দুই রান নিতেই মাঠে উল্লাসে ফেটে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। কারণ আরেকটি বিশ্বকাপ এখন তাদের শোকেসে।

ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ট্র্যাভিস হেড। ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট: বিরাট কোহলি।