১০০% বিদ্যুৎ দিয়েছি, ১০০% বাড়িও দেব।৩২ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছে। একশ ভাগ ঘর করবে। দেশের একজন মানুষও গৃহহীন হবে না, ভূমিহীন হবে না, ঠিকানা ছাড়া থাকবে না। তিনি বলেন, মানুষ যখন একটি ঘর পায় এবং হাসে, তখন সবচেয়ে ভালো লাগে। জাতির পিতা এটাই চেয়েছিলেন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি ঈদ উপহার হিসেবে হস্তান্তরকালে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। দেশের চারটি উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পোড়াদিয়া বালিয়া, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার হাজীগাঁও, বরগুনার সদর খেজুরতলা ও সিরাজগঞ্জের খোকশাবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পে কার্যত যোগ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
এ সময় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিভাগীয় প্রশাসক, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দুই শতাধিক একর জমিসহ ঘরের নথি সুবিধাভোগীদের হস্তান্তর করা হয়। সুবিধাভোগীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজনও গৃহহীন হবে না’- এই নীতিকে সামনে রেখে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলো জমিসহ ঘর পাচ্ছে। খাস জমি না পাওয়া গেলে জমি কিনে উপড়ে ফেলা মানুষদের ঠিকানা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে ৩২ হাজার ৯০৪ জনকে বাড়ি দিচ্ছি। এটা একটা ঈদ উপহার। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে অনেক উচ্ছেদকৃত জমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
২১ বছর পর সরকারের প্রথম মেয়াদে ১৯৯৬ সালে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প চালু করে ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের কাজ শুরুর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০১ সালে সরকারে আসিনি। ৬ বছর নষ্ট হয়। আমরা ২০০৯ সালে সরকারে এসে আবার এই পদক্ষেপ নিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, বিশ্বের আর কোনো দেশ এমন উদ্যোগ নিয়েছে কিনা আমার জানা নেই। কিন্তু আমরা জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক। আমি শুধু তার মেয়ে নই, তার আদর্শে বিশ্বাসী। তাই আমার শক্তি মানুষের সেবা করা, মানুষের জন্য কাজ করা।
করোনা মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রকোপ আবারও বাড়তে পারে। তাই সতর্কতা অবলম্বন করা. তিনি বলেন, করোনার টিকা ও টিকাদান কার্যক্রমে প্রচুর অর্থ ব্যয় হলেও সরকার তা বিনামূল্যে জনগণকে দিয়েছে। শুধু ভ্যাকসিনের দাম হিসেব করলে চলবে না। টিকাদান কার্যক্রমের সামগ্রিক খরচ বিবেচনা করে এটি গণনা করা উচিত। সরকার তাদের সব বিনামূল্যে দিয়েছে।
গণভবন শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে খাওয়াতে চান রুশা রানী : ভূমিহীন ও গৃহহীন ব্যক্তি হিসেবে রুশা রানী তার স্বামী মালোর ধরা মাছ রান্না করে প্রধানমন্ত্রীকে খাওয়াতে চান। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পোড়াদিয়া বালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ঈদ উপহার হিসেবে ঘর পাওয়া ১১০টি পরিবারের একজন রুশা রানী ও তুষার।
এ সময় রুশা রানী বলেন, উপহার বাড়ি পেয়ে তিনি খুবই খুশি। তিনি বলেন, আমি আমার স্বামীর ধরা মাছ রান্না করে আপনাকে (শেখ হাসিনা) খাওয়াতে চাই। আপনি (শেখ হাসিনা) আমাদের এখানে দেখতে আসেন। ’ প্রধানমন্ত্রী হেসে সেখানে যেতে রাজি হন।
প্রধানমন্ত্রীর জন্য কাঁথা সেলাই: প্রধানমন্ত্রীর উপহার বাড়ি পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রহিমা খাতুন। সেই বাড়ির জন্য একটা ফ্রিজও কিনেছিলেন। কার্যত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার হাজীগাঁও থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার তৈরি কাঁথা নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
রহিমা খাতুন।