হোয়াইটওয়াশই একমাত্র প্রত্যাশা
চট্টগ্রামে এখন সিটি নির্বাচন এতটা না হলেও, বন্দর নগরীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টাইগারদের শেষ ওডিআইয়ের একাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ উত্তেজনা রয়েছে। দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টাইগার সমর্থকদের বিপুল আগ্রহ নিয়ে আজ কাকে রাখবেন তা তামিম ইকবালরা বেছে নিচ্ছেন। তবে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তামিমের কাজটিকে কিছুটা সহজ করে দিয়েছেন। শেষ ম্যাচ থেকে ১০ পয়েন্ট তুলে নিতে তিনি একাদশে খুব বেশি পরিবর্তন না করার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। গতকাল ক্যাপ্টেন তামিমও গণমাধ্যমে একই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। আজকের ম্যাচের একাদশে, এক বা দুটি জায়গায় পরিবর্তন দেখা যাবে। আর বোলিং বিভাগে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। একাদশ যাই হোক না কেন, স্বাগতিকরা ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামেরও জয়ের চেষ্টা করবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ওয়ানডে দল ইতিহাসের দুর্বল দল। টাইগারদের বিপক্ষে টানা দুটি ম্যাচে দেড়শ’রও কম রানে তার অলআউট হওয়ার প্রমাণ। জেসন মোহাম্মদকে অপমান করা নিয়ে ক্যারিবীয় দেশগুলি সমালোচনার ঝড়ের মুখে পড়েছে। বিশেষত নিয়মিত ক্রিকেটাররা যেহেতু বাংলাদেশে খেলতে আসেন নাই তাই প্রাক্তনরা তুলাধুনা করছেন। তারা কোচ ফিল সিমনসকে কাঠগড়ায় তুলতে ছাড়েননি। হোয়াইটওয়াশের সামনে দাঁড়িয়ে কোচ ‘আমরা এখানে ৩০ পয়েন্টের জন্য এসেছি ।এখনও ১০ পয়েন্ট পাওয়ার সুযোগ আছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে উন্নতি করা। ১২২ রানের পরে আমরা ১৪৮ করেছিলাম তবে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে পারার জন্য ২৩০ থেকে ২৫০ রান সংগ্রহ করতে হবে। বোলারদের লড়াইয়ের জন্য কিছু দিতে হবে। এবং অবশ্যই লক্ষ থাকবে পূর্ণ ১০ পয়েন্ট ।
হোয়াইটওয়াশের মুখে কোচ সিমন্স যতটা অসহায় বোধ করছেন ততই সাফল্যের হাততালি বাজছে স্বাগতিক কোচ রাসেল ডোমিংগোর মনে। আজ যদি তিনি ক্যারিবিয়ানকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেন তবে তিনি গর্বিত হয়ে উঠবেন। যদিও হোয়াইটওয়াশ আইসিসির নতুন নিয়মে কোনও অর্থ বহন করে না। পয়েন্ট নিতে সক্ষম হওয়া আসল। কোচরা ম্যাচটি জিততে এবং পুরো ১০ পয়েন্ট পেতে পারলে খুশি হবে। টাইগার অধিনায়ক তামিম আরও বলেছেন, পয়েন্ট অর্জনকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। “সিরিজ জিতলেও আমাদের আরও ১০ পয়েন্ট পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম দুটি ম্যাচে ভাল খেলেনি। তারা একটি বিপজ্জনক দল, তবে তারা যে কোনও সময় ঘুরে দাঁড়াতে পারে। আশা করি, আমরা বজায় রাখতে পারব ধারাবাহিকতা।
ওয়ানডে ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতায় উইন্ডিজের বয়স অর্ধেক বাংলাদেশ। তারা ‘৭৩ সাল থেকে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলছে। ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশ এই সুযোগ পেয়েছে। রেকর্ড বই অনুসারে, ২৩ বছর বয়সী এই দৌড়ে উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজটি টাইগারদের ৭৪ তম। আগের ৭৩টি সিরিজে ১৩ বার তার প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করতে পেরেছিলেন। যার সিংহভাগ আবার জিম্বাবুয়েকে করেছে। নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার কৃতিত্বও তামিমদের। ২০০৯ সালে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ঘরের মাটিতে ক্যারিবীয়দের কাছে ৩-০ তে হেরেছিল বাংলাদেশ। গত এক দশকে আরও পাঁচবার সিরিজের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও উইন্ডিজ হোয়াইটওয়াশ হয়নি। তারা আজ চট্টগ্রামে জিতলে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা দেশে হোয়াইটওয়াশ হবে। টাইগাররা পাকিস্তানের নিউজিল্যান্ডের পরে বড় শক্তির আরও একটি তৃতীয় দলের বিপক্ষে তাদের সমস্ত ম্যাচ জিতে একটি নতুন রেকর্ড গড়বে।
তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সিরিজটি যদি জয়ের সাথে শেষ হয় তবে বাংলাদেশ সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠবে। ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৩০ এর সমান হলেও রান রেট ভাল থাকায় তামিম বাহিনী শীর্ষ দুইয়ে থাকবে। এই পয়েন্টগুলি ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য যোগ্যতার একমাত্র উপায় হবে।