• বাংলা
  • English
  • অর্থনীতি

    হাসিনা সরকারের আর্থিক শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে

    বহুমুখী অনিয়ম, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং এবং শেখ হাসিনা সরকারের অকার্যকর প্রকল্প গ্রহণসহ অর্থনীতির ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে অন্তর্বর্তী সরকার। এটি তৈরিতে দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেবে। কমিটির প্রধান প্রধান উপদেষ্টার সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য মনোনীত করতে পারেন। কমিটির সদস্যরা বিনা বেতনে কাজ করবেন। পরিকল্পনা কমিশনের যেকোনো ভবন তাদের অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করতে পারে। সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, বিভাগ/সংস্থা কমিটিকে সব ধরনের তথ্য ও সহায়তা প্রদান করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে খবর।

    জানা গেছে, গত দেড় দশকে দেশের অর্থনীতি বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিগত শেখ হাসিনা সরকারের গৃহীত চরম অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং ও অদক্ষ প্রকল্পের কারণে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।

    অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা সরকারের ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা

    টাকা ঋণ রেখে গেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের স্থিতি ছিল দেশের তিনটি বাজেটের মোট বরাদ্দের সমান। অন্যদিকে বিগত সরকার বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে কর আদায় না বাড়িয়ে দেশি-বিদেশি ঋণের দিকে ঝুঁকছিল। তা ছাড়া অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অর্থ পাচারের অবাধ সুযোগ,

    বাজার সিন্ডিকেটের ফলে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। জুলাই শেষে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। বলা যায়, বিগত সরকারের আমলে দেশের অর্থনীতি উল্টে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজ্য প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সুসংহত করতে ৬টি চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগোচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে রয়েছে অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করার পাশাপাশি কাঠামোগত সংস্কার দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা মোকাবেলা, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা জোরদার করা, দুর্নীতি নির্মূল করা, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, কর ও শুল্ক নীতির সংস্কার এবং বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি।

    অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি সামগ্রিক চিত্র প্রকাশ করা দরকার। এই উদ্দেশ্যে, সরকার ‘অর্থনীতির অবস্থার উপর একটি শ্বেতপত্রের প্রস্তুতি’ শিরোনামের একটি ধারণাপত্র তৈরি করেছে। ধারণার কাগজটি বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার উপর তথ্য সমৃদ্ধ একটি কাগজ তৈরির পরামর্শ দেয়। এতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত কাগজে দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র থাকবে এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে সরকারের গৃহীত কৌশলগত পদক্ষেপ, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি প্রতিফলিত হবে। নথি তৈরির সময় স্টেকহোল্ডারদের সাথে পরামর্শ এবং পরামর্শ করা হবে। ৬টি বিষয় তুলে ধরা হবে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনা, মুদ্রাস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য ঘাটতি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান।

    ডাঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য গত রাতে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি মনে করি এটি দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হবে। যা ভবিষ্যতের জন্য অনুসরণযোগ্য। শিগগিরই উপযুক্ত ও যোগ্য লোক দিয়ে একটি কমিটি গঠন করব।