জাতীয়

হজ টিমে বড় ধরনের পরিবর্তন।দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনার নানা অভিযোগ ছিল

অবশেষে হজকেন্দ্রিক অব্যবস্থাপনা দূর করতে ব্যবস্থা নেয় সরকার। গত বছর হজে ব্যাপক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ওঠে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এবারও একই অভিযোগ উঠেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাদের বদলি করেছে।

গত দুই দিনে প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদল হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব ও হজ কার্যক্রমের প্রধান উপসচিবের বদলির বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, হজ কার্যক্রম পরিচালনার মূল দায়িত্ব পালন করে হজ বিভাগ। এ বিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখা হজ-২০১৮। এ শাখার দায়িত্বে ছিলেন উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন। এ পদে থাকাকালীন গত বছর তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এরপর তাকে অন্য মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি বদলি ঠেকাতে তদবির করেন এবং এবারও কাজ চালিয়ে যান। কিন্তু এবার হজ মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাকে বদলি করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত বছর শাহীনের বদলিতে মন্ত্রণালয়ের প্রায় সব কর্মকর্তা খুশি হলেও ধর্ম সচিব কাজী এনামুল হাসানের কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। এবার সচিবকে বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে হজ-সংক্রান্ত যোগ্য সচিবসহ অন্তত তিনজন কর্মকর্তাকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আনা হয়েছে। ধর্ম সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সচিবালয়ের সচিব হামিদ জমাদ্দার। এর আগে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেন। ধর্ম সচিব কাজী এনামুল হাসানকে তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। উপসচিব শাহীনকে ডেপুটেশনে শিল্প মন্ত্রণালয়ে জাতীয় উৎপাদনশীলতা সংস্থার (এনপিও) পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানায়, কাজী এনামুল হাসানকে দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে অনেকেই প্রশংসা করেন। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয়ে সচিবের দায়িত্ব পেয়ে তিনি খুশি নন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তার প্রত্যাশা ছিল তাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এ কারণে তিনি মন্ত্রণালয়ের কাজে মনোযোগী হননি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি অনলাইনে মিটিং করতেন। এবারও হজ সংক্রান্ত শীর্ষ প্রশাসনিক দলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, কয়েকজন সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সচিব থাকলেও ধর্ম সচিবের নাম নেই। এ ছাড়া হজ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজে তিনি উপসচিব শাহীনের ওপর নির্ভর করতেন। এসব বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও হতাশ হয়েছেন। সর্বশেষ হজ প্রশাসনিক দলে সচিবের অনুপস্থিতিকে শীর্ষ ব্যবস্থাপনা ইতিবাচকভাবে নেয়নি বলে জানা গেছে। তাই হজ মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এ বিষয়ে মূল দল পরিবর্তন করেছে সরকার।

এবারের হজ কার্যক্রমে শুরু থেকেই অব্যবস্থাপনার অনেক অভিযোগ রয়েছে। হাজীদের ভিসা না পাওয়ায় অন্তত ৯৮টি হজ এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া হজ সংক্রান্ত অব্যবস্থাপনার বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে একাধিক চিঠিও পাঠিয়েছে বাংলাদেশ বিমান। এই চিঠিগুলি সমসাময়িক সংগ্রহে রয়েছে। বিমান সূত্রে জানা গেছে, আবুল কাশেম শাহীন কয়েকটি হজ এজেন্সির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি লিখে অযাচিত সহযোগিতা চেয়েছেন।