• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    হজের নিবন্ধনের কোনো সাড়া নেই

    সৌদি সরকার আগামী বছর (২০২৫) হজের জন্য ১ লাখ ২৭ হাজার জনের কোটা নির্ধারণ করেছে। এরপর ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু হয়। ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েও তেমন সাড়া মেলেনি। বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী। গতকাল, এ পর্যন্ত মাত্র ৮.৩৩৪ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ২ হাজার ৫৫৫ জন এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৫ হাজার ৭৭৯ জন। এ ছাড়া হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত দেশের ১২৪টি এজেন্সিতে একজনও হজযাত্রী নিবন্ধন করেননি। শর্ত অনুযায়ী এসব সংস্থার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে মন্ত্রণালয়।

    আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীদের কোটা পূরণ নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। চলতি সপ্তাহে হজ ব্যয়ের প্যাকেজ ঘোষণা হতে পারে। প্যাকেজ ঘোষণার পর নিবন্ধন বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। হজযাত্রীরা কেন নিবন্ধন করতে এত অনীহা জানতে চাইলে দুই সংস্থার কর্মকর্তারা বলেন, রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে। আবার মানুষের কাছে এখন নগদ টাকা কম, অনেকের ব্যবসায় গতি নেই। এর বাইরে অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই বলে আসছে হজের খরচ কমানোর চেষ্টা করবে। তাই কত টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয় তা জেনে রেজিস্ট্রেশনের জন্য অপেক্ষা করছেন অনেকে।

    ড.মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর হজের খরচ কমানোর দাবি ওঠে  সে লক্ষ্যে কাজ করছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. এ এফ এম খালিদ হোসেন। খরচ কমাতে তিনি বাংলাদেশ এভিয়েশন অথরিটির সঙ্গেও কথা বলেছেন। এরপর সৌদি আরবে গিয়ে দেশটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দেশে বৈদেশিক ব্যয় এখন পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

    হজের প্রস্তুতি ও খরচ প্রসঙ্গে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন বলেন, আগামী ৩০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে সাশ্রয়ী প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। এ লক্ষ্যে হিসাব-নিকাশ চলছে। মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে এভিয়েশন সচিব, বিমানের এমডি ও পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করেছে। এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বিবিআইসি) চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা হয়।

    খুব ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলেন ধর্ম উপদেষ্টা , আমরা এখনো চূড়ান্ত হিসাব করিনি। নীতিগতভাবে খরচ কমাতে রাজি হয়েছে বিমান। এ ছাড়া এনবিআর ও ঢাকা বিমানবন্দর ব্যবহারের জন্য যে কর দিতে হবে তা বিবেচনা করা হচ্ছে। হজ এজেন্সিগুলো হজের টিকিটে একটি পরিমাণ পায়। আমরা সকলেই হজ প্যাকেজকে জনবান্ধব করতে চাই, কমাতে চাই, তাই আমি তাদের অনুরোধ করছি যেন সে পরিমাণ না নেয়। সবার বিবেচনায় হজের খরচ কমবে।

    নিবন্ধনের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ২৩ তারিখের মধ্যে অগ্রাধিকার দিলে আমরা আন্দাজ করতে পারতাম আমাদের মধ্যে কতজন থাকবে। সেক্ষেত্রে আমরা সৌদি আরবের অঞ্চলগুলিকে সংজ্ঞায়িত করতে পারি। আমাদের নিবন্ধনের জন্য ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত যথেষ্ট সময় আছে।

    জানা গেছে, আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি হজ ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর হজ ফ্লাইট শুরু হবে মে মাসে। তবে যারা আগ্রহী তারা ৩০ হাজার টাকা দিয়ে প্রাক-নিবন্ধন করেছেন। এখন ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করতে হবে। গত বছর, ২০২৪ সালে, ধর্ম মন্ত্রণালয় ন্যূনতম ৫৯০,০০০ টাকা মাথাপিছু প্যাকেজ দিয়ে হজযাত্রীদের সুযোগ দেয়। ২০২৩ সালে এই খরচ ছিল যাত্রীপ্রতি সর্বনিম্ন ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা; যা একটি রেকর্ড। ফলে গত দুই বছরে হজযাত্রীদের কাঙ্খিত সাড়া পাওয়া যায়নি। হজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই ওমরাহ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

    আগামী বছরের হজ কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি পাওয়া সংস্থাগুলোকে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্ম মন্ত্রণালয় ১৪৪৬/২০২৫ হিজরির জন্য ৮৯১টি হজ এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত তালিকার ১(জে) শর্ত নিম্নরূপ- প্রকাশিত তালিকার কোনো এজেন্সি যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া হজ ২০২৫ মৌসুমে হজযাত্রীদের নিবন্ধন না করে, তাহলে সেই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে আরও বলা হয়, হজ ২০২৫ সালের প্রাথমিক নিবন্ধন ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। তবে অনুমোদিত তালিকায় প্রকাশিত হজ এজেন্সির মধ্যে ১২৪টি হজ এজেন্সির কোনো প্রাক-নিবন্ধিত/প্রি-নিবন্ধিত হজযাত্রী নেই। এই পরিস্থিতিতে, ১২৪টি হজ সংস্থাকে হজযাত্রীদের দ্রুত প্রাক-নিবন্ধন/প্রি-নিবন্ধন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।