স্বাস্থ্য আলোচনা।অতিরিক্ত ওষুধও কিডনির ক্ষতি করতে পারে
কিডনি মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীরের সকল ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ কিডনির মাধ্যমে পরিশোধিত হয়। কিডনি রোগ মানবদেহে সর্বনাশ করে। কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে আমরা সহজেই কিডনি রোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
অতিরিক্ত ওষুধ ক্ষতিকর: অতিরিক্ত ওষুধ বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধ এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো কিডনির ক্ষতি করে। সামান্য ব্যথায় ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
ডায়াবেটিস কিডনির শত্রু: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে। সেজন্য রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত একজন ব্যক্তির কিডনির সমস্যা হচ্ছে কিনা তা দেখতে প্রতি বছর অ্যালবুমিন নামক পদার্থের জন্য তাদের প্রস্রাব পরীক্ষা করাতে হবে।
পানি পান করুন: পর্যাপ্ত পানি পান করা শরীরকে কিডনির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য পানি অপরিহার্য।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: ওজন বাড়ার ফলে আপনার কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। উপরন্তু, অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়; যা পরবর্তীতে কিডনি রোগের বিকাশে ভূমিকা রাখে।
ধূমপান, অ্যালকোহল ক্ষতিকর: কিডনি সুস্থ রাখতে ধূমপান ও অ্যালকোহল অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন: দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। একই সাথে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। সে জন্য ওষুধ খেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার এবং ব্যায়াম: স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন। যাদের কিডনি রোগ আছে তাদের অতিরিক্ত আমিষ ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সচল রাখতে হবে। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ব্যায়াম করা সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
নিয়মিত চেকআপ: বছরে অন্তত একবার পরীক্ষা করে আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা জানুন। যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা উচ্চ রক্তের কোলেস্টেরল আছে তাদের নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করাতে হবে।
লেখক: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং এন্ডোক্রিনোলজিস্ট, সিএমএইচ