সৌদি আরব বাংলাদেশে বড় পরিসরে বিনিয়োগের প্রস্তাব
সৌদি আরব তার স্থিতিশীল সরকার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো রেকর্ডের কারণে বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বড় আকারের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। মঙ্গলবার দোহায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎকালে সৌদি আরবের বিনিয়োগমন্ত্রী খালিদ আল-ফালিয়াহ এবং অর্থনীতি ও পরিকল্পনামন্ত্রী ফয়সাল আলীব্রাহিম এ প্রস্তাব দেন।
বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন দুই মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, “বিনিয়োগকারী হিসেবে আমরা খুব কম সমস্যা দেখি। প্রথমত, দেশের স্থিতিশীলতা, ব্যবসায়ীরা স্থিতিশীল কিনা, বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ খুবই ভালো এবং সে কারণেই আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক এম নজরুল।
মন্ত্রীরা বাংলাদেশকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসেবে প্রশংসা করে বলেন, “বাংলাদেশের নেতৃত্ব খুবই ভালো, ভিশন ভালো এবং তাদের প্রতিশ্রুতি খুবই ভালো। দেশে একটি স্থিতিশীল সরকার রয়েছে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো।”
তারা জানান, এরই মধ্যে তারা বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যার মধ্যে পতেঙ্গা বন্দরের জন্য কিছু করতে চান এবং এর পাশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করতে চান। “সৌদি আরব বাংলাদেশকে তার ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, কারণ দেশটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত। আমরা যদি এটিকে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরিণত করি, তাহলে আমরা ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং আরও অনেক কিছু দেখতে পারব…” তারা যোগ করেছে।
দুই মন্ত্রী বলেছেন, তারা শিপিং লাইনের পাশাপাশি এখানে পেট্রোকেমিক্যাল, ডিজেল, জেট ফুয়েল, সার এবং প্রধান বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতিমধ্যেই অনুমতি দিয়েছেন এবং অবিলম্বে চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে সৌদি আরবকে মাতারবাড়ি ও পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবও দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগের সুবিধার্থে যে কোনো বাধা দূর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সৌদি আরবও পারস্পরিক সুবিধার জন্য কৃষির মতো বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায়। এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
হজ বিষয়ক আলোচনায় উভয় মন্ত্রী সৌদি আরবে আবাসন ও হাসপাতাল নির্মাণে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের অনুরোধ জানান। সৌদি আরবের দুই মন্ত্রী দুই দেশের জনগণের স্বার্থে সৌদি আরবে ফার্মাসিউটিক্যাল, বেভারেজ এবং রিয়েল এস্টেট শিল্প স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী ও অর্থনীতিমন্ত্রী সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। তারা বাংলাদেশের আরএমজির প্রশংসা করে বলেন, এটি বিশ্বের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস ক্যাপিটাল হয়ে উঠেছে।