• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    সীমান্তে রোহিঙ্গাদের চাপ বাড়ছে

    সাদেক হোসেন (৪০), মিয়ানমারের মংডু এলাকার বাসিন্দা। ২০১৮ সালের শুরুতে, তাকে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে এবং কারাগারে প্রেরণ করে। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর গত আগস্টে তিনি মুক্তি পান। কারাগার থেকে বের হয়ে স্বজনদের না পেয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর টেকনাফের একটি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে উখিয়ার বালুখালীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। এ সময় তার চার সন্তান ও স্ত্রী তার সঙ্গে ছিলেন। খবর পেয়ে ক্যাম্প ইনচার্জ তাকে পরিবারসহ ট্রানজিট পয়েন্ট ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেন।

    সাদেক হোসেন বলেন, মিয়ানমারে এখন বসবাসের কোনো পরিবেশ নেই। স্বজনরা বাংলাদেশের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।

    শুধু সাদেক হোসেন নয়, গত এক মাসে বিভিন্ন সময়ে একাধিক পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে অন্তত ৩০ জন রোহিঙ্গা। তারা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছেন।

    সম্প্রতি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের কারণে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে আবারও বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা। কিন্তু তা খুবই সামান্য। গত দুই দিনে ১০-১৫ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজারের কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার পেরিয়ে আরও হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, তুমব্রু, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে তারা।

    কুতুপালং এলাকার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হেলাল উদ্দিন  বলেন, ২০ থেকে ৩০ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বেশ কিছু রোহিঙ্গাও বাংলাদেশে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। কিন্তু সীমান্তে বিজিবির কঠোর অবস্থানে তা সম্ভব হচ্ছে না।

    রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব ও পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে আরও রোহিঙ্গা এলে উখিয়া-টেকনাফে স্থানীয় মানুষের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।

    পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানান, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশ নতুন করে অভিযান শুরু করলেও বর্তমান পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা শান্ত রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন দেশ থেকে পাঠানো ত্রাণের কথা জেনে তারা বাংলাদেশে আসছেন। কারণ, রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের মাত্রা কিছুটা কমে গেলেও মিয়ানমারের পুলিশ ও সেনাবাহিনী কোনো কাজে রোহিঙ্গাদের বাইরে যেতে দিচ্ছে না। অনাহারে থাকা রোহিঙ্গারা তাই বাংলাদেশে ছুটছে।

    কুতুপালং ক্যাম্পের একাধিক রোহিঙ্গা জানান, ঘুমধুম ও টেকনাফ সীমান্তে কয়েকশ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন চলে গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন।

    রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত অষ্টম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে রোহিঙ্গাদের আগমনের খবর শুনে আমরা বিভিন্নভাবে তদন্ত করেছি।কিন্তু নতুন করে আসার সত্যতা পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।

    মন্তব্য করুন