দেশজুড়ে

সিজারিয়ান অপারেশনে এক মহিলার মৃত্যু, ৩ লক্ষ টাকা মীমাংসা

টাঙ্গাইলের মধুপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে খাদিজা খাতুন (২০) নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুটি জীবিত আছে। এই ঘটনায় মধ্যরাতের বৈঠকে ৩ লক্ষ টাকার মীমাংসা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে মধুপুর হাসপাতাল রোডের বেসরকারি ক্লিনিক এশিয়া হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। মৃত খাদিজা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার কেশোরগঞ্জ এলাকার বাকতা গ্রামের সৌদি প্রবাসী শাহীন মিয়ার স্ত্রী।
পরিবার জানিয়েছে যে, এটি খাদিজার দ্বিতীয় সিজারিয়ান। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. সিমলা আফতাব শাওন এই অপারেশনটি করেন। সিজারিয়ান অপারেশনের পরপরই খাদিজার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হলেও তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। স্বজনদের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের পর দীর্ঘদিন ধরে রোগীর সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি এবং অবহেলার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
সন্ধ্যায় খাদিজাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও পরিবারের দাবি, ততক্ষণে খাদিজা মারা গেছেন। এই বিষয়ে হাসপাতালের অন্যতম পরিচালক মানিক সাহা বলেন, অভিযোগগুলি সত্য নয়। অস্ত্রোপচারের পর রোগীকে পোস্ট-অপারেটিভ রুমে রাখা হয়েছিল এবং কাউকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রোগীর ইতিমধ্যেই শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। রক্তপাত এবং শ্বাসকষ্টের কারণে তাকে আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া সত্ত্বেও তার অবস্থার অবনতি ঘটে। তিনি দাবি করেন যে, রোগীকে ময়মনসিংহে নিয়ে যেতে দেরি হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, খাদিজার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে, স্বজনরা এবং স্থানীয়রা হাসপাতালে বিক্ষোভ শুরু করে। স্বজনরা চিকিৎসার কাগজপত্র চেয়ে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা না দেওয়ায় উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। খাদিজার স্বজনরা জানিয়েছেন, চিকিৎসায় স্পষ্ট অবহেলার কারণে খাদিজার মৃত্যু হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে রাতেই স্থানীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় হাসপাতাল প্রশাসন ও মৃতের পরিবারের মধ্যে মীমাংসা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। রাত ১১টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। এদিকে, হাসপাতালের সামনে দেখা যায়, সিজারিয়ান সেকশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি বেশ কয়েকজন রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।